IIT Delhi তে গবেষণা করা এক ছাত্রী প্ল্যাস্টিক (Single Use Plastic) নামক ‘রাক্ষস” এর থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য এক অভূতপূর্ব পন্থা বের করেছেন। উমা দ্বিবেদি (uma dwivedi) নামের ওই গবেষণারত ছাত্রীর গবেষণায় তাজ্জব গোটা দেশ। উমা প্ল্যাস্টিকের ব্যাবহার ডিজেল বানানোর জন্য করছে। এর ফলে একদিকে যেমন প্ল্যাস্টিকের সমস্যা দূর হবে, তেমনই আরেকদিকে ওই প্ল্যাস্টিকের থেকে ডিজেল বানিয়ে দেশে তেলের সমস্যা দূর করা যাবে, এবং তেলের দামও কমে যাবে। প্ল্যাস্টিক দিয়ে তৈরি এই ডিজেলের কোয়ালিটি বাজারে পাওয়া ডিজেলের প্রায় সমানই। আপাতত এর ব্যাবহার এক যায়গায় থাকা ইঞ্জিন যেমন জেনারেটরে করা যেতে পারে। আর আগামী দিনে এই ডিজেলকে আরও উন্নত করে গাড়িতেও ব্যাবহার করা হবে।
উমা দ্বিবেদি সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, দিল্লী মুম্বাইয়ের মতো শহরে প্রতিদিন জমা হওয়া বৈহ্যিক পদার্থের মধ্যে প্ল্যাস্টিকের অনুপাত ১২ থেকে ১৫ শতাংশ হয়। আর তাঁর মধ্যে ৫০ শতাংশ একবার ব্যাবহার করা প্ল্যাস্টিক থাকে। হাইড্রোকার্বন পলিমার দিয়ে তৈরি হওয়া এই বৈহ্যিক পদার্থে পলিথিন আর পলিপ্রোপিলিন দিয়ে ভর্তি থাকে। প্রাকৃতিক রুপে এগুলোকে নষ্ট করতে হাজার হাজার বছর লেগে যায়। কিন্তু উন্নত টেকনোলোজি ব্যাবহার করে, এগুলোকে ডিজেল বানানো যেতে পারে।
নজর রাখার বিষয় হল, প্ল্যাস্টিক প্রাকৃতিক রুপে গলার সময় ডায়োক্সিন, ফ্যুরান ছাড়াও প্রকৃতির জন্য বিপদজনক গ্রিন গ্যাস হাউস এর মতো গ্যাস উৎপন্ন করে। এরমানে এই যে, প্রাকৃতিক রুপে গলার সময়েও প্ল্যাস্টিক বিশ্বের জন্য বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন করে। কিন্তু সেই প্ল্যাস্টিক দিয়ে ডিজেল তৈরি হলে, এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
উমা দ্বিবেদি জানায়, প্রায় এক বছরের পরিশ্রমের পর তাঁর বানানো ডিজেল বাজারে বিক্রি হওয়া ডিজেলের তুলনাআয় ৭০-৮০ শতাংশ মান ঠিক আছে। এই ডিজেলকে বাজারে বিক্রি হওয়া ডিজেলের সাথে ৬০ঃ৪০ অনুপাতে মিলিয়ে বায়োডিজেলের মতো ব্যাবহার করা যেতে পারে। উমা জানান, এই ডিজেলকে বাজারে বিক্রি হওয়া ডিজেলের মানে আনতে ওনার প্রয়াস চলবে।
এখনো পর্যন্ত এক কিলো প্ল্যাস্টিক থেকে ৭৫০ মিলি ডিজেল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। এর দাম প্রায় ৪৫-৫৫ টাকা পড়ছে। যদিও, পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর এই ডিজেলের শুদ্ধতা আরও বাড়বে এবং এর খরচ তৈরির অনুপাতে কমে যাবে। বাজারে এই ডিজেল উপলব্ধ হতে, প্রায় এক বছর সময় লেগে যাবে।