এখন তো ‘হম দো, হামারে দো’। আবার ‘হাম দো, হামারে এক’ও খুব চলছে। এখন শুনছি, আমি এক, আমারও এক’- এই জমানা চালু হয়েছে। তা হোক। ওসব নিয়ে আমি ভেবে কী করবো। ওসব সেই ফ্যামিলি, সরকার, হাসপাতাল, ডাক্তাররা ভাববেন। আমি শুধু যা ঘটছে সেটুকু বললাম।
আমার দৌড় বলা পর্যন্ত। বাকিরা তাদের ইচ্ছে মতো দৌড়োবেন।
কিন্তু আমাদের ছোটোবেলায় এতো হালকা পরিবার খুব কমই ছিলো। তখন পরিবারগুলো ছিলো বেশ ভারী ভারী। চার পাঁচ ভাইবোন তো তখন আকছার। হাম দো, হামারে ছ কিম্বা সাত, আটও ছিলো।
ছিলো তো ছিলো। সেসব উঠে গেছে।
কিন্তু যখন ছিলো তখন একটা মজার অঙ্ক ছিলো। আমি অঙ্কে কাঁচা, তাই পারতপক্ষে আমি অঙ্ক টঙ্কো এড়িয়ে যেতাম। ওই যেটুকু না করলে ক্লাসে উৎরানো যাবেনা, সেই টুকুই। তবে একটা মনপসন্দ অঙ্ক স্কুল বেলায় খুব করতাম। সেটা ভাইবোন গোনার অঙ্ক।। বেশিরভাগ বাড়িতেই যেহেতু তখন অনেক ভাই আর বোনের জমজমাট সমাহার তাই অঙ্কটা খুব জমতো। যদিও সেই অঙ্ক অনেকেরই জানা।
তাতে কি হয়েছে, আমার অঙ্কের বিদ্যা ওইটুকুই, তাই ওই অঙ্কটাই আজকে বলি।
আমি চিনি বা না চিনি তাতে কিছু যায় আসতো না তখন আমার। আমি যে কোনো পরিচিত, অপরিচিতর পরিবারের ভাইবোনের সংখ্যা অবলীলায় বলে দিতে পারতাম। বলাবাহুল্য, সেটি একটি অতি সাধারণ অঙ্ক মাত্র।
সেই বয়সে ওটাই মজা।
এই যেমন পরিচিত বা অপরিচিত ছেলে বা মেয়েটিকে বলতাম তোমরা যে ক’জন ভাই, তার সাথে এক যোগ কর, তারপর যোগফল কে দুই দিয়ে গুন কর। এবার সেই গুনফলের সাথে তিন যোগ কর এবং তারপর সেই যোগফলের সাথে পাঁচ গুন কর। তবে যা করবে মনে মনে করবে। তারপর যা ফলাফল হলো তার সাথে তোমাদের বোন সংখ্যা যোগ কর। সব অঙ্ক মনে মনে করে আমাকে বলা হলো যে তার হয়েছে
ধরাযাক- ছেষট্টি। ব্যাস আমি তৎক্ষনাৎ তাকে বললাম যে তাদের চার ভাই ও এক বোন। তার পরিবারের ভাইবোনের সংখ্যা অবধারিত ভাবে মিলেই যেতো। সে তো তখন ‘হাঁ’।
তখন তার কি যে হাসি। আমিও খুশি।
বা ওই যোগ, গুনের ফলে হয়তো ফল বেরোলো ঊনপঞ্চাশ। আমি বললাম, দুটি ভাই ও চারটি বোন। এটিও মিললো নিখুঁত ভাবে।
তা হতো কিভাবে ?
আমি অঙ্কে কাঁচা হলেও এই একটি মাত্র অঙ্কে ছিলাম দারুণ পাকা।
ব্যাপারটা সোজা।
উল্টোদিক থেকে যা উত্তর আসবে তার থেকে পঁচিশ বিয়োগ করলেই ফলাফল হাজির। বাঁদিকের সংখ্যা ভাই ও ডানদিকে দাঁড়িয়ে বোন।
খেলাটা বাড়ির বাচ্চাদের শিখিয়ে দিন। লকডাউনে ওরা খুব মনমরা। ওরা মজা পাবে। স্কুল খুললেই ক্লাসের বন্ধুদের চমকে দেবে।
আমি তো দিতাম।
সুমন ঘোষ