স্বপ্নসুন্দর কাশ্মীরের গুন্ডিবাগে একাই মারুতি নিয়ে ঘুরত কিশোর আদিল। বাবর থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলেও, বেশি দূর পর্যন্ত যেতে ভয় পেত আদিল। আদিলের ভয় ছিল, লাইসেন্স না থাকবার জন্য যদি সে ধরা পড়ে যায়। আর সেই আদিলই একদিন গাড়ি নিয়ে সোজা সেনা কনভয়ে ঢুকে গিয়ে ৪০ জন বীর জওয়ানকে এক নিমেষে উড়িয়ে দেবে, তা ভাবতে পারেননি আদিলের বাবা মা। আদিলের হতবাক পরিবার এদিন পুলওয়ামাকান্ডের এক বছরের বার্ষিকীতে সন্তান হারানোর শোকে বিহ্বল। আর স্মৃতিচারণা করছেন ছেলে বিপথে যায়ার ঘটনার। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আদিলের পরিবার কী জানিয়েছে, দেখে নেওয়া যাক।
ভারত-পাক ম্যাচ ও আদিল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হলে আদিলের বন্ধুরা যখন পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন দেখাত, তখন আদিল ভারতের হয়ে গলা ফাটাত। আর সেই আদিল ভারতীয় সেনার জওয়ানদের নারকীয়ভাবে হত্যা করেছে , এটা মানতে পারছেন না আদিলের মা হামিদা দার। কীভাবে সন্ত্রাসের অন্ধকারে গিয়েছিল আদিল? যে ছেলে বাড়িতে মাকে রান্নাবান্নায় সাহায্য করত, মাকে ছেড়ে এক চুল এগোতে চাইত না, সেই ২২ বছরের আদিল কীভাবে সন্ত্রাসের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেছে, তার কোনও হদিশ পাচ্ছে না আদিলের পরিবার। তবে আদিলের বাবার দাবি, একবার কাশ্মীরের পাথর ছোঁড়া যুবক হিসাবে আদিলকে ধরে নিরাপত্তা বাহিনী। জনসমক্ষে সে অপমানিত হয়। আর তার সঙ্গেই বুরহান ওয়ানির মৃত্য়ুর খবর কাঁপিয়ে তোলে উপত্যকাকে। এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েই ছেলে বিপথে গিয়েছে বলে জানিয়েছে দার পরিবার।
আদিলের পরিবারে সন্ত্রাসের গ্রাস! জানা যায় আদিলের পরিবারে এপর্যন্ত বংশের ৩ সন্তানকে দেখেছে সন্ত্রাসের রাস্তায় যেতে। আচমকা আদিলের গায়েব হয়ে যাওয়ার পর থেকে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও আদিলকে আর সন্ত্রাসের রাস্তা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেনি পরিবার। অন্যদিকে, আদিলের খুড়তুতো দুই ভাইও একইভাবে বাড়ি ছেড়ে সন্ত্রাসের রাস্তায় পাড়ি দেয়। যদিও তার এক ভাই তৌসিফ ফিরে আসে ও গ্রেফতার হয়। তবুও এক বুকচাপা আতঙ্ক আর যন্ত্রণা সঙ্গে নিয়ে কাশ্মীরের ছোট্ট গ্রাম গুন্জিবাগে দিন কাটাচ্ছে পুলওয়ামাকাণ্ডের হত্যাকারী আদিলের পরিবার।