রেশন দোকানগুলিতে গ্রাহকরা এখনই সংযত না হলে সমস্যা ও জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে বিভিন্ন মহলের আশঙ্কা। প্রশাসনের বক্তব্য, এ ব্যাপারে পুলিশ ও রেশন দোকানগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
করোনা (Corona) মোকাবিলায় ২১ দিনের লকডাউন (Lockdown) ঘোষণা করেছে সরকার। আর এই পরিস্থিতিতে গরিবের সংসারে ঠিকমতো অন্ন জোগানোর চেষ্টায় ১ এপ্রিল বুধবার থেকে সমগ্র রাজ্যে বিনামূল্যে রেশন বন্টনের কাজ শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। গ্রাহকদের আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে আরও ইতিবাচক ভূমিকা নিলে ভাল হয়।“
দফতরের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, রেশন দেওয়া হচ্ছে স়কাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ টা এবং দুপুর ২ টো থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত। রাজ্যের ১০ টি জেলার জন্য ৪৩০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে । অন্যান্য জেলার পাশাপাশি কলকাতায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ দরিদ্র মানুষ এই বিনামূল্যের রেশনে উপকৃত হচ্ছে। সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রেশন দোকানের সামনে মানুষের লাইন পড়ে যায় কলকাতা ও জেলার কিছু দোকানে মারপিট, গন্ডগোলের কথাও শোনা যাচ্ছে। কিন্তু গ্রাহকদের সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাইছি মাথাপিছু বরাদ্দ একবারে নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। সবাই পর্যায়ক্রমে তাঁর প্রাপ্য পাবেন। আর, সামাজিক দূরত্বের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিন।
‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন’ (All India Fair Price Shop Dealers Federation) -এর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু শুক্রবার জানান, সারা পশ্চিমবঙ্গে এরকম দোকানের সংখ্যা ২০ হাজার ২৭৮, কলকাতায় সংখ্যা ৯২৪। কলকাতা সহ রাজ্যে বিভিন্ন রেশন দোকানে যেভাবে ভীড় উপচে পড়ছে তাতে শঙ্কিত চিকিৎসক, পুলিশ সবাই। এত লোক নিয়ন্ত্রণের পরিকাঠামো থানায় নেই। সংগঠনের মালিকদের আশঙ্কা, একদিকে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি না মানায় এই ভিড়ে করোনার সংক্রমণ ছড়াতে পারে। অন্যদিকে কিছু দোকানে স্থানীয় একাংশ লুঠপাটের চেষ্টা করতে পারে। চালক ও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। লরি চলছে না। গুদামে চাল-গমের বস্তা তোলার লোক নেই। এই পরিস্থিতিতে দোকানগুলিতে পর্যাপ্ত সামগ্রী আসছে না। অথচ আতঙ্কিত হাজার হাজার লোক সমবেত হচ্ছেন রেশন দোকানগুলোতে। “
রাজ্যের দরিদ্র পরিবারগুলোকে মূলত চারটি ভাগে ভাগ করে রেশন বন্টনের কাজ শুরু হয়েছে । অন্নপূর্ণা অন্তোদ্বয় যোজনা-সহ এসপিএইচএইচ, পিএইচএইচ, আরকেএসওয়াই রেশন কার্ডে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়া হবে । এওয়াইওয়াই কার্ডে সাড়ে সাতশো গ্রাম চাল ও দশ কিলো আটা দেওয়া হবে বিনামূল্যে। আরকেএসওয়াই১ কার্ডে এক কিলো চাল ও দেড় কিলো গম দেওয়া হবে ।আরকেএসওয়াই ২ কার্ডে ৫০০ গ্রাম চাল কিলো-প্রতি ১৩ টাকা ও ৫০০ গ্রাম গম প্রতি ৯ টাকা দিয়ে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।
—অশোক সেনগুপ্ত (Ashok Sengupta)