নিজেদের ইস্তাহার সামনে আনার পর বিজেপির বিরুদ্ধে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল কংগ্রেস। এ বার কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারকেই ভণ্ডামি আর ভুলে ভরা বলে তোপ দাগলেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। ক্ষমতার লোভে কংগ্রেস দেশদ্রোহীদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে বলেও দাবি করলেন তিনি।
শনিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে বলেছে কংগ্রেস। তাদের তৈরি ‘ওয়েল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার’ কতটা কার্যকরী তা মানুষ ঠিকই বুঝতে পারছে। রেলমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের কাছে নির্বাচনী ইস্তাহারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যে ভাবে মিথ্যা আশা জাগানো হচ্ছে মানুষকে, তাতে অচিরেই মানুষের বিশ্বাস ভাঙবে।”
ক্ষমতায় এলেই বেহাল কর্মসংস্থানের হাল ফেরাতে দেশের ২২ লক্ষ সরকারি শূন্যপদে চাকরি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাহল। পাশাপাশি নিজের ন্যায় প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের গরিবদের অ্যাকাউন্টে বছরে ৭২ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের গরিব এবং কৃষকেরা পাঁচ বছরে তিন লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন বলে ইস্তাহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন তিনি। কংগ্রেসের দাবি ছিল, এর ফলে উপকৃত হবে দেশের প্রায় পাঁচ কোটি দরিদ্র মানুষ। সেই দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে রেলমন্ত্রী বলেন পুরোটাই ভাঁওতা।
পাল্টা তাঁর দাবি, গত পাঁচ বছরে শিল্প ও কৃষি, সব ক্ষেত্রেই সাফল্য পেয়েছে এনডিএ সরকার। অন্তর্বর্তী বাজেটে দরিদ্র কৃষকদের জন্য ডায়রেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফার স্কিম ঘোষণা করেছে সরকার। প্রথম দফায় ওই প্রকল্পের ২ হাজার টাকা পৌঁছেও গিয়েছে প্রাপকদের হাতে। গরিব চাষীরা এখন বছরে ৬০০০ টাকা করে পেতে শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, “২০০৪ সালে কংগ্রেস সভাপতি বলেছিলেন ক্ষমতায় এলে প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। কিন্তু দশ বছরেও কিছু করে উঠতে পারেনি কংগ্রেস সরকার। মোদী সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, দেশের ১৮,৪৫২ টি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। তবে বর্তমানে তার অধিকাংশেই বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। ”
রেলমন্ত্রীর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বায়ুসেনাকে নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়ে পাকিস্তানে পাঠাচ্ছেন, বালাকোটে জঙ্গি শিবির সমূলে বিনাশ করার জন্য। আর এ দিকে বিরোধীরা প্রতিবেশী দেশের যুক্তি ও তর্কের সমর্থনে কথা বলে তাদেরই হাত শক্ত করছে। পরোক্ষে সন্ত্রাসেই মদত দেওয়া হচ্ছে।
মোদী সরকারের জিএসটিকে ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’ বলেও কটাক্ষ করেছিলেন রাহুল। সেই দিকে আঙুল তুলে রেলমন্ত্রী বলেন, “নোটবন্দি, কালো টাকা নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছিল কংগ্রেস। মজার ব্যাপার হলো, টু-জি স্ক্যাম, কোলগেট স্ক্যাম, অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।” একই সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতে দীর্ঘ দিনের অনুন্নয়নের জন্য আগের কংগ্রেসি সরকারগুলির দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। পীযূষ গয়ালের কথায়, “২০০৯ সালে কংগ্রেস বলেছিল নেট পরিষেবায় বিপ্লব আনবে তারা। আদতে দেখা গেছে, ২০১৪ সাল অবধি দেশের মাত্র ৫৯টি গ্রামে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা রয়েছে। অথচ মোদী সরকারের কল্যাণে দেশের এক লক্ষেরও বেশি গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে গেছে।”