ভারতে পালিয়ে আসা পাকিস্তানী হিন্দু শরণার্থীদের মতে পাকিস্তান এক জীবন্ত নরক

কিছুদিন আগে পাকিস্তানে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘটনা যেখানে মুসলিমরা জোড় করে পাকিস্তানের সিন্ধ অন্চলের দুটি হিন্দু রমনীকে বলপূর্বক অপহরণ করে ধর্মান্তর করায় যার ভিডিও দেখে ভারতে আশ্রয়প্রাপ্ত পাকিস্তানী হিন্দু শরণার্থীদের মন শঙ্কায় ভরে ওঠে ।

একোনো নতুন ঘটনা নয় এবং স্বাধীনতার পর থেকেই প্রায়ই এই ঘটনা ঘটে থাকে। বিভাজনের সময় প্রায় ২ কোটি হিন্দুর বাস পাকিস্তানে ছিল কিন্তু তাদের কে কোনোদিনও পাকিস্তান সে দেশের মনে করে নি এবং তাদের কে জোড় করে গরিব বানিয়ে রাখা তাদের রমনীদের জোড় করে ধর্মান্তর করে মুসলিম ছেলেদের সাথে বিবাহ করিয়ে তাদের কে শুধুমাত্র মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ানোর কাজে লাগানো ও তাদের জীবনধারণের ন্যূনতম সামান্য অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের উপর ক্রমাগত অত্যাচার চলতে থাকে ।

বর্তমানে পাকিস্তানে মাত্র ২০-২২ লাখ হিন্দু বেঁচে রয়েছে যারা চরম দুরবস্থা ও অত্যাচারের স্বীকার । প্রচুর পরিমানে হিন্দু স্বরণার্থীরা ভারতে রয়েছে যারা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় আশাবাদী এবং তারা তাদের উপর হওয়া অত্যাচারের বহু বিবরণ বহু ভিডিও তে দিয়েছে যা ইন্টারনেটে রয়েছে । মূলত এখন দিল্লীর মজনু কা টিলা ও আদর্শনগর অন্চলে সেইসব স্বরণার্থীর বাস । পাকিস্তানের সিন্ধ অন্চলে হিন্দুদের বাস সবচেয়ে বেশী যেখানে মীরপুরখাস , থাকপারকর ও উমেরকোট এলাকাতে হিন্দুদের বসতি । বিস্ময়ের কথা যেখানে পাকিস্তানে হিন্দুদের জনসংখ্যা ক্রমে ক্রমে তলানি তে গিয়ে ঠেকেছে সেখানে ভারতে মুসলিমদের জনসংখ্যা বাড়ছে ।

পুরো বিশ্ব আজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখছে কিভাবে পাকিস্তানে হোলি উৎসবের কিছু আগেই ঐ দুটি নীরিহ রমনী কে তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের জোড় করে বিবাহ দিয়ে তাদের ধর্ম পরিবর্তন করা হচ্ছে । পাকিস্তানে হিন্দুদের কে এত গরীব করে রাখা হয়েছে যে তারা আরও অত্যাচারের স্বীকার হচ্ছে এবং তাদের কথা কোনো উপর মহল পর্যন্ত পৌঁছায় না । সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় ঐ সকল হিন্দু পরিবারের লোকেরা গরীবী ওঅত্যাচার থেকে বাঁচতে হয় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে না হলে ভারতে পালিয়ে আসা আর যারা ধর্ম পরিবর্তন করতে চায় না তাদের সহ্য করতে পাকিস্তানের মুসলিমদের অকথ্য অত্যাচার ও মাঝে মাঝে বিনা বিচারে অকাল মৃত্যু ।

পাকিস্তানের মুসলিমদের মতে যতক্ষণ একটা হিন্দুও বেঁচে রয়েছে তারা এই অত্যাচার চালিয়ে যাবে । ভারতে পালিয়ে আসা হিন্দু স্বরণার্থীদের মতে ভারতের নাগরিকত্ব না পাওয়ার ভয়ে আজও কিছু হিন্দু পরিবার পাকিস্তানে বসবাসকারী এবং যেদিন ভারত সংবিধান সম্মত নিয়ম বানিয়ে তাদের মর্যাদার নাগরিকত্ব দেবে তারা সকলে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেবে যদিও তাদের অর্থনৈতিক কষ্ট হয় । পাকিস্তানে বসবাসকারী হিন্দুরা এটাও ভেবেছিল যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সরকারে এলে হয়ত আগের নওয়াজ শরিফ সরকার থেকে তাদের কিছুটা রক্ষা হবে কিন্তু বর্তমানে সরকার পাকিস্তানী গুপ্তচর সংস্হা ISI ও ইসলামিক ধর্মগুরুদের অত্যাচার আরও বেড়ে গেছে এবং সরকারতাদের প্রতি উদাসীন ।

সম্প্রতি পাকিস্তানের বাসিন্দা এক হিন্দু ছাত্র প্রকাশ হিরানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেওয়া এক খোলা চিঠিতে, সেদেশে হিন্দু মেয়েদের উপর হওয়া অমানুষিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে এবং এব্যাপারে সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।


প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেওয়া এক পাকিস্তানী হিন্দু ছাত্রের খোলা চিঠি

পাকিস্তানে কর্মরত মানবাধিকার সংস্হা South Asia Partnership এর মতে প্রতিবছর পাকিস্তানে হিন্দু ও খ্রীষ্টান প্রায় ১০০০-১৫০০ রমনী কে এভাবেই বলপূর্বক অপহরণ করে তাদের কে মুসলিমদের সাথে বিয়ে করিয়ে তাদের ধর্মপরিবর্তন হয় এবং প্রতিরোধ করলে তাদের মেরে দেওয়া হয় ।

আলোক ভাটের করা একটি টুইটে এমনি মর্মান্তিক ছবি ফুটে উঠেছে।

পাকিস্তান হিন্দু কাউন্সিলের মতে প্রতি বছর ৫০০০ হিন্দুরা শরণার্থী হয়ে ভারতে পালিয়ে আসে ইসলামিক অত্যাচার ও ধর্মান্তকরণ থেকে বাঁচতে ।বর্তমানে ঐ দুই রমনী আজও কোথাও তা জানা নেই বিশ্বে এ নিয়ে ভারত যথেষ্ট সোচ্চার তবে যখন কিছু লোক পাকিস্তানের ধর্মীয় অত্যাচারের স্বীকার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত মালালা ইউসুফজাহীকে ঐ দুই হিন্দু রমনীর অধিকারের কথা বিশ্ব দরবারে রাখতে অনুরোধ করা হয় তখন তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং একভাবে মৌন থেকে কট্টর ইসলামিক বর্বরতা কেই সমর্থন করেন।

যদিও পাকিস্তানের সেনেট এক লোকদেখানো আইন পাশ করেছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের রক্ষার্থে বলা বাহুল্য যে সেটা সিন্ধ অন্চলে বসবাসকারী হিন্দু কোলী সম্প্রদায়ের জন্য একটা কাগজে লিখিত আইন হিসাবেই থেকে গিয়েছে যার কোনো সদ্ব্যবহার আজও হয় নি এবং তাদের প্রতি অত্যাচার ও ধর্মান্তরকরণ আজও একইভাবে চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.