ভারত যেমন সিঙ্গল-ইউজ় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গোটা বিশ্বেরই সেই পথে হাঁটা উচিত।– এই দাবি তুলেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের জলবায়ু সম্মেলনে বক্তৃতা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আরও একবার গলা তুললেন প্লাস্টিক ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে।
গ্রেটার নয়ডায় আয়োজিত বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সংকট সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবারও মনে করিয়ে দেন, পরিবেশের সঙ্গেই ওতোপ্রতো ভাবে জড়িয়ে আছে মানুষের ক্ষমতা। তাই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সকলকে একসঙ্গে লড়তে হবে। বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রনেতাকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতের মতোই সব দেশের সরকারকে হাত মেলাতে হবে। একজোট হয়ে মোকাবিলা করতে হবে এই সঙ্কট।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন উপলক্ষে আগামী ২ অক্টোবর থেকে সারা দেশে ছ’ধরনের প্লাস্টিকজাত দ্রব্যের ব্যবহার ও উৎপাদনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ছ’টি দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের ব্যাগ, কাপ, প্লেট, ছোট বোতল, স্ট্র এবং কিছু স্যাশে পাউচ।
এক জন কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “এই নিষেধাজ্ঞা কড়া ভাবে মেনে চলা হবে এবং এই ধরনের সমস্ত প্লাস্টিক দ্রব্য উৎপাদন, ব্যবহার ও আমদানির বিষয়টিও নিষেধাজ্ঞার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।” অনলাইন শপিং সংস্থাগুলিকেও নির্দেশ দেওয়া হবে জিনিসপত্র প্যাক করার সময়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার কম করতে।
অনুমান করা হচ্ছে, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী হলে ভারতের বার্ষিক প্লাস্টিকের ব্যবহার প্রায় ১৪ মিলিয়ন টন, কমে যাবে। এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে মোটা অঙ্কের জরিমানাও আরোপ করা হবে বলেও জানা গেছে। তবে প্লাস্টিক ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির ছ’মাস পর থেকে ওই জরিমানা কার্যকর করবে কেন্দ্র।নরেন্দ্র মোদী এ দিন আরও বলেন, “আমরা নানা রকম পরিকল্পনা করতেই পারি। কিন্তু সত্যিকারের বদল আনতে হলে হাতে কলমে কাজ করতে হবে মাঠে নেমে।”
গবেষণা বলছে, প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সারা বিশ্বে সমস্যা বাড়ছে। সারা বিশ্বের যত প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে, তার প্রায় ৫০ শতাংশ সমুদ্রে গিয়ে মিশছে, ক্ষতি করছে সামুদ্রিক প্রাণীদের। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে প্লাস্টিকের স্ট্র, চামচ, ছুরি, কটন বাড– এ সব নিষিদ্ধ করা হবে।