চাঁদের টিমে আরও এক বাঙালি, হুগলির চন্দ্রকান্তর পর বীরভূমের বিজয়

ল্যাণ্ডার বিক্রমের প্রাথমিক খোঁজ মেলার পর, টিম চন্দ্রযানে খোঁজ মিলল আরও এক বাঙালির। চন্দ্রকান্ত কুমারের পর বিজয় কুমার দাই। হুগলির গুড়াপের পর বীরভূমের মল্লারপুর। চন্দ্রযান-২-এর সঙ্গে যুক্ত হল আরও এক বাঙালির নাম। বাংলার নামও।

মল্লারপুর থানার অন্তর্গত দক্ষিণ গ্রামে বাড়ি বিজয়ের। অত্যন্ত মেধাবী বিজয় কুমার বীরভূমের দক্ষিণ গ্রামে এক দরিদ্র চাষি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮৪ সালের ২ মে। বর্তমানে কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। বাবা নারায়ন চন্দ্র দাই একজন চাষি।

গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা। ছোট থেকেই মেধাবী। তাঁর পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, বিজয় যখন ক্লাস এইটের ছাত্র, স্কুলের মাস্টারমশাইরা তাঁকে পাঠাতেন ক্লাস সিক্স-সেভেনের ক্লাস নিতে। গ্রামের স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর তিনি ভর্তি হন বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরে। তারপর কল্যাণী সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করার পর যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি শেষ করেন। অ্যারোস্পেস পরীক্ষায় পাশ করার পর ২০০৭ সালে ইসরোয় যোগ দেন বিজয়। তিনি পড়াশোনা করেছেন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন নিয়ে। অর্বিটার কন্ট্রোলের যে টিম রয়েছে, তার অন্যতম সদস্য বীরভূমের বিজয়।

তাঁর ভাই বাপি দাই বলেন, “অভাবের সঙ্গে লড়াই করেই আমরা বড় হয়েছি। আমার দাদা ছোট থেকেই জিনিয়াস। আমরা জানতাম ও একদিন সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছবে। আজ দেশকে গর্বিত করছে। এটাই আমাদের আনন্দ।”

শুক্রবার গভীর রাতে তখন গোটা দেশের চোখ বেঙ্গালুরুর শ্রীহরিকোটায় ইসরোর সদর দফতরে। অপেক্ষার প্রহর গোনা। এই বুঝি ঘোষণা হল, ‘চাঁদের মাটি ছুঁল ল্যাণ্ডার বিক্রম। কিন্তু তা হয়নি। বিষাদ নামিয়ে ইসরোর কন্ট্রোল রুম ঘোষণা করেছিল, ‘নো সিগনাল।’ তারপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জড়িয়ে ধরে ইসরো চেয়ারম্যানের কান্না, মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণে হার না মেনে এগিয়ে চলার বার্তার পর রবিবার দুপুরে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ল্যাণ্ডার বিক্রমের খোঁজ পায় ইসরো। যদিও এখনও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবু যেন নিথর শরীরে হৃদস্পন্দন পাওয়ার আনন্দ। এর.মধ্যেই জানা গেল আরও একজন বাঙালি জড়িয়ে আছেন এই ঐতিহাসিক চাঁদ অভিযানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.