নির্বাচনী বন্ডের জন্য স্বচ্ছতা নষ্ট হচ্ছে ভোটে। এই অভিযোগে বন্ড বাতিল করার আর্জি জানানো হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার সেই আর্জি নাকচ করে দিলেও প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে নির্দেশ দিয়েছে, প্রতিটি দলকে নির্বাচন কমিশনে জানাতে হবে তারা কোথা থেকে অনুদান পেয়েছে। ৩০ মে-র মধ্যে এসম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হবে।
বিচারপতিরা নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি দল একটি মুখ বন্ধ করা খামে এসম্পর্কে রিপোর্ট জমা দিক। সেই খাম থাকবে নির্বাচন কমিশনের ‘সেফ কাস্টডিতে’।
বিচারপতিরা বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যে অবস্থান নিয়েছে, তাও আমরা জানি। বিষয়টি নিয়ে শুনানি হওয়া দরকার। অল্প সময়ের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
সুপ্রিম কোর্ট অর্থমন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে, এপ্রিল- মে মাসে নির্বাচনী বন্ড কেনার সময় কমিয়ে দিতে হবে। আগে স্থির হয়েছিল, দু’মাসে মোট ১০ দিন ধরে ওই বন্ড কেনা যাবে। এখন তা কমে হয়েছে পাঁচদিন। বিচারপতিরা নির্দেশ দিয়েছেন, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোনও দল যাতে বাড়তি সুবিধা না পায়, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনী বন্ড কেনার মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা নিজের পরিচয় গোপন রেখে রাজনৈতিক দলকে ডোনেশন দিতে পারে। গত বৃহস্পতিবার সরকার আদালতে জানিয়েছিল, কোনও পার্টিকে কে অনুদান দিয়েছে তা ভোটারদের না জানলেও চলবে।
সুপ্রিম কোর্ট এখনই এসম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে না চাইলেও জানিয়েছে, নাম গোপন করে পার্টিকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি সত্যিই এক বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভোট প্রক্রিয়ার পবিত্রতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে এর ফলে।
নির্বাচনী বন্ডের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল সিপিএম এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রাইটস নামে একটি সংগঠন। আবেদনের ওপরে শুনানি শেষ হয় বৃহস্পতিবার। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ রায় দিয়েছে শুক্রবার।
আবেদনকারীদের আর্জি ছিল, হয় নির্বাচনী বন্ড বিক্রি নিষিদ্ধ করা হোক। নয়তো কারা বন্ড কিনছে তাদের নাম জানানো হোক। সিপিএমের বক্তব্য, যারা বিভিন্ন পার্টিকে সাহায্য করছে, তাদের নাম যদি জানা না যায়, তাহলে ভারতের গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়বে। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে এক বেঞ্চ গত বছর অক্টোবর মাসে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিশ দেয়।