নীরদ সি চৌধরী তাঁর আত্মঘাতী বাঙ্গালী পুস্তকে ১০০ বছরের বাঙালির ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখিয়েছেন যে বাঙ্গালী কোনোদিন সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়নি বা নিতে পারেনি।
সবসময় বড়াই করে আমরা খুব বুদ্ধিমান ও সংস্কৃতিবান। কিন্তু সারা ভারত যা করে বাঙালি ঠিক তার উল্টোটা করে। তার মানে, হয় বাঙালি বুদ্ধিমান আর সারা ভারত বুদ্ধিহীন। তাই বুদ্ধিমান বাঙ্গালী বাবুরা ছেলেমেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পরে চেয়ে থাকেন ব্যাঙ্গালোর, পুনে বা হায়দরাবাদ এর দিকে। চিকিৎসা করতে গেলে প্রাধান্য দেন ব্যাঙ্গালোর, মনিপাল,হাইদ্রাবাদ,মুম্বাই আর ভেলোরকে। ৪২ লক্ষ বাঙালি শ্রমিক পেটের দায়ে অন্য রাজ্যে কাজ করেন। এখানে কত পলিটেকনিক কলেজ আছে আর কর্নাটকে কত আছে এর তথ্য Google সার্চ করে জেনে নিন। লজ্জা হয় না আমরা এত পিছিয়ে পড়লাম কেন?১৯৭৭ সালের পরে পশ্চিমবঙ্গ কোনোদিন কেন্দ্র রাজ্যে এক সরকার পায়নি।তার ফল তারা ভোগ করছে আগামীদিনেও করবে।
১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বঙ্গদেশে প্রাদেশিক নির্বাচনে মুসলমানরা ঢেলে ভোট দিল মুসলিম লীগকে আর বুদ্ধিমান হিন্দু বাঙ্গালী ভোট দিল ধর্ম নিরপেক্ষ কংগ্রেসকে। হিন্দুমহাসভা ভোটে হেরে গেল। কি আনন্দ। বছর ঘুরতে না ঘুরতে পুঁটুলি হাতে বউ বাচ্চা নিয়ে কোটি কোটি বাঙালি হিন্দু ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে এলো এ বঙ্গে। তাও লজ্জা নেই। গর্ব করে বলে আমা-গো এত বিঘা জমি ছিল, এত বিঘা পুকুর ছিল, এত বড় বাড়ী- সব মনে আছে। মনে নেই কেবল কারা লাথি মেরে তাড়িয়ে ছিল। কারা আপনার বাড়ির মেয়েদের ধর্ষন করেছিল! প্রশান্ত সুর, প্রমোদ দাশগুপ্ত, অশোক মিত্র তাড়া খেয়ে এখানে এসে কমিউনিস্ট পার্টি করেছেন। প্রফুল্ল সেন বরিশাল ছেড়ে গান্ধীবাদ প্রচার করেছেন।
কোনো চিন্তা নেই হিন্দু বাঙালি। দুই টাকা কিলো চাল খাও,ভোটের আগে বিনা পয়সায় ডিম ভাত খাও, দুই-চার হাজার টাকায় শিক্ষকের চাকরি করো। ১০ বছর এসএসসি না হলেও কোনো প্রতিবাদ কোরো না।রাজ্য সরকারি চাকরি সব ক্যাজুয়াল করে দূধেল গাইদের ঢোকালেও প্রতিবাদ কোরো না।ঝোলা কাঁধে সুজাত ভদ্রের মত মানুষকে বোঝাতে হবে বিজেপি এলে দেশের কি সর্বনাশ হবে। তাদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে প্রমোদবাবু আপনার মতো লাথি খাওয়াদের দ্বিতীয় প্রজন্ম- একদিকে তারা আব্বাস সিদ্দিকীর জুতা চাটছে অন্যদিকে বিজেপির উপর থুতু ফেলছে। কারন বিজেপি ন’বছর বন্ধ থাকা সিপিএমের অফিস খুলে দিয়েছে।
আনন্দ বাজার, বর্তমানও এই সময় বিজ্ঞাপনের লোভে বিক্রি হয়ে গেলেও ‘বুদ্ধিজীবী’ থেকে সাধারণ মানুষ কোনো প্রতিবাদ করা যাবে না। চোখের জল মুছেও বলতে হবে ‘আমরা খুব খুব ভালো আছি’। ভালো আছি আমরা!!!!