পূর্ব লাদাখের গালওয়ান, প্যাঙ্গং সহ একাধিক এলাকা থেকে পাততাড়ি গোটাচ্ছে চিনের বাহিনী। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা পিছিয়ে নেওয়ার ছবিও সামনে এসেছে। প্যাঙ্গং হ্রদ সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে সামরিক কাঠামো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রশস্ত্র, সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে নিজেদের ডেরায় ফিরছে লাল ফৌজ। ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, দুদিন আগে জেটি ও হেলিপ্যাডের কাঠামো খুলতে গিয়েছিল চিনের সেনাকে। সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, নিজেদের ক্যাম্প গুটিয়ে ফিরে গেছে তারা। গালওয়ান, গোগরার যে জায়গায় তাঁবু খাটিয়ে বসে গিয়েছিল লাল সেনা, সেসব জায়গা এখন ফাঁকা হয়ে গিয়েছে।
চুসুল সীমান্তে নবমতম সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের পরেই সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে সম্মতি দেয় দুই দেশই। সেই মাফিক সেনা পিছনো বা ডিসএনগেজমেন্টের প্রক্রিয়া চলছে। প্যাঙ্গং হ্রদের পশ্চিম দিক বরাবর ফিঙ্গার পয়েন্ট ২ থেকে ফিঙ্গার পয়েন্ট ৩ রেঞ্জ অবধি ধ্যান সিং ধাপা পোস্টে ফিরে যাচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। অন্যদিকে, চিনের সেনা ফিঙ্গার পয়েন্ট ৮ থেকে পিছু হটতে শুরু করেছে। ফিঙ্গার পয়েন্ট থেকে ফিঙ্গার পয়েন্ট ৮ অবধি এলাকায় ১০ কিলোমিটার অবধি বাফার জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শোনা গিয়েছে, ফিঙ্গার ৪ ও ফিঙ্গার ৫ এলাকায় বাঙ্কার, জেটি ভেঙে দিয়েছে চিনের সেনা।
Image result for New Satellite Images Show China Vacating Military Camps At Ladakh
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ প্যাঙ্গং থেকে যুদ্ধট্যাঙ্ক, হাউইৎজার কামানও সরিয়ে নিচ্ছে দুই দেশ। প্যাঙ্গং হ্রদের দক্ষিণ তীরে কৈলাস পার্বত্য অঞ্চলের চুসুল সেক্টর থেকেও যাবতীয় সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
Image result for New Satellite Images Show China Vacating Military Camps At Ladakh
একটি ভিডিও সামনে এসেছে যেখানে দেখা গেছে, প্যাঙ্গং সংলগ্ন এলাকায় নিজেদের বাঙ্কার, অস্থায়ী সামরিক কাঠামো ভেঙে ফেলছে চিনের সেনা। অস্ত্রশস্ত্র যা মোতায়েন করা ছিল সেগুলো সব গুছিয়ে ট্রাকে ভরছে। পাহাড়ি ঢাল বেয়ে তাঁবু ঘাড়ে নিয়ে সার বেঁধে চিনের সেনাদের নেমে আসতেও দেখা গেছে।
গত এপ্রিল-মে মাস থেকে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ঢিল ছোড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে দু’দেশের সেনা। ঘটেছে একাধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এর আগে একাধিকবার সেনা সরিয়ে নেওয়া বা ডিসএনগেজমেন্টের কথা বলেছিল দুই দেশই। চিন সেনা সরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তা হয়নি। বরং সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করে ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করেছে। তবে শেষবারের বৈঠকের পরে চিন দাবি করেছে, দু’পক্ষই দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করার প্রশ্নে সম্মত হয়েছে। গোগরা হটস্প্রিং ও গালওয়ান উপত্যকা থেকে ২ কিমি করে মোট ৪ কিলোমিটার এলাকায় তৈরি হবে বাফার জ়োন। ওই এলাকায় টহল দিতে পারবে না কোনও দেশের বাহিনীই। সামরিক অস্ত্রও মোতায়েন করা যাবে না।