বেলা ১১ টার কিছু পরে আচমকাই প্রধানমন্ত্রী টুইট করেন, মেরে পেয়ারে দেশবাসীয়োঁ, আজ লগভগ ১১.৪৫ -১২.০০ বজে ম্যাঁয় এক মহত্ত্বপূর্ণ সন্দেশ লে কর আপ কে বিচ আউঙ্গা। অর্থাৎ তিনি বেলা পৌনে ১২ টা থেকে ১২ তার মধ্যে একটা বড় খবর শোনাতে চলেছেন। এর পরেই দেশ জুড়ে শুরু হয় জল্পনা। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী তখন নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার বৈঠকে বসেছিলেন, তাতে অনেকের ধারণা হয়, নিরাপত্তা বিষয়ক কোনও গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হবে। প্রায় সব কাজকর্ম বন্ধ করে সবাই নজর রাখেন টিভিতে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ভারত আজ মহাকাশে মহাশক্তি দেশ হিসেবে নাম দাখিল করলো। কিছুক্ষণ আগেই আমাদের বৈজ্ঞানিকেরা অরবিটে একটি লাইভ স্যটেলাইট কে ধ্বংস করেছে। এর আগে শুধুমাত্র চীন, রাশিয়া আর আমেরিকার কাছেই এই শক্তি ছিল।
অরবিটে ভারতের শত্রু স্যাটেলাইট ৩০০ কিমি দূরে ছিল। ভারতের বৈজ্ঞানিকেরা মিশন শক্তি অপারেশন এর নাম দিয়ে এই অভিযান সফল করে। মাত্র তিন মিনিটেই এই অপারেশনকে সফল করা হয়েছে। ভারতে তৈরি এ-স্যাট মিসাইল দিয়ে এই সাফলতা অর্জন করা হয়েছে।
মহাকাশে এরকম শক্তি প্রদর্শন করা ভারত বিশ্বের চুতুর্থ দেশ হিসেবে উঠে এলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, আমাদের বৈজ্ঞানিক দের উপরে আমি গর্ব করি। উনি বলেন, মহাকাশে আমাদের ক্ষমতা কাওর বিরুদ্ধে না। আমাদের উদ্দেশ্য হল শান্তি বজায় রাখা।
উনি বলেন, মহাকাশে ভারতের উন্নতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কারও সাথে কোন বিবাদ চাইনা। কিন্তু আমাদের ক্ষতি করতে আসলে আমরা চুপ করে থাকবনা। এটা নতুন ভারত। আমরা আমাদের বৈজ্ঞানিক দের উপর গর্ব করি। সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি মিসাইল মহাকাশে শত্রুদের ধ্বংস করেছে। আর আমি এর জন্য ডিআরডিও কে শুভেচ্ছা জানাতে চাই।
নির্ধারিত সময়েরও ২০-২২ মিনিট পরে শুরু হয় মোদীর ভাষণ। তিনি বলেন, দেশ আজ এক গুরুত্বপূর্ণ শক্তি অর্জন করেছে। মহাকাশে ‘লো অরবিট’ একটি উপগ্রহকে এদিন রকেট ছুঁড়ে ধ্বংস করেছেন ভারতের বিজ্ঞানীরা। সেই রকেট তৈরি হয়েছে ভারতেই। এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনের হাতে এই ক্ষমতা ছিল। এবার বিশ্বে ভারত হল চতুর্থ দেশ।
मिशनशक्ति : एंटी सेटेलाइट वेपन A-SAT,के सफलतापूर्वक परीक्षण एवं भारत के अंतरिक्ष महाशक्ति बनने के महत्वपूर्ण अवसर पर भारत के वैज्ञानिकों एवं भारत सरकार के नेतृत्व का समस्त देशवासियों की ओर से हार्दिक अभिनंदन।राष्ट्रजीवन का यह गौरवशाली क्षण सदियों तक समाज के लिए प्रेरणास्रोत रहेगा pic.twitter.com/5fkRDZXtpA
— RSS (@RSSorg) March 27, 2019
মোদী জানান, অ্যান্টি স্যাটেলাইট অপারেশন শেষ করতে লেগেছে মাত্র তিন মিনিট। অর্থাৎ তিন মিনিটের মধ্যেই ওই উপগ্রহকে ধ্বংস করে ফেলা গিয়েছে। একটি অকেজো উপগ্রহকে ধ্বংস করে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নিজের ক্ষমতা প্রমাণ করেছে ভারত। এই অপারেশনের নাম ছিল ‘মিশন শক্তি’। তা ছিল অত্যন্ত জটিল একটি অপারেশন।
মোদী ভাষণে বলেন, আমি এমন একটা পরিকল্পনা করেছি যাতে দেশ দু’কদম এগিয়ে থাকবে। দেশে যখন নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হয়েছে, তখন মোদীর এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে নানা মহলে। অনেকেই বলছেন, ওই মন্তব্যে ভোটের আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে।
মোদী অবশ্য দাবি করেছেন, আমাদের দেশে এর চেয়ে গর্বের মুহূর্ত আগে কখনও আসেনি। তাঁর কথায়, হর হিন্দুস্তানিয়োঁ কে লিয়ে ইসসে গর্ব কা পল আউর কুছ নেহি হো সকতা।
এর আগে পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে উরি হামলার বদলা নিয়েছিল ভারতীয় সেনা। পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে জঙ্গি মেরে সতীর্থদের বলিদানের বদলা নেওয়ার জন্য সেনাকে ফ্রি হ্যান্ড দিয়েছিল মোদী সরকার।
তারপর কাশ্মীরে পুলওয়ামা হামলার বদলা নেওয়ার জন্য পাকিস্তানে ঢুকে জইশ এর জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে এসেছিল ভারতীয় সেনা। কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় সেনার ওই হামলায় প্রায় তিনশ জঙ্গি খতম হয়েছিল।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকার আসার পর থেকেই তাঁরা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, কোনরকম ভাবেই সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া হবেনা। আর আজ টার ফল স্বরুপ মহাকাশেও শত্রুদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ইতিহাসে সোনার অক্ষরে নাম লিখে ফেলল ভারত।