তৃণমূলের অন্দরমহলে আলোড়ন ফেলে দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে আচমকাই তিনি লেখেন, “১১০-১২০ জন বিধায়ক আমার সাথে সম্পর্কে আছে, ২৩ মে-র পর যে যে বিধানসভা লিড পাবে বিধায়করা ইস্তফা দিয়ে দেবেন, নভেম্বরই বিজেপি সরকার।” স্বভাবতই এরপরে বাংলার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। কারণ এক সময় তৃণমূলের কংগ্রেসের সংগঠনের সর্বেসর্বা ছিলেন মুকুল। তৃণমূলের সাংগঠনিক খুঁটিনাটি তাঁর নখদর্পণে। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি একবার বলেছিলেন ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দলের ৮৫% টিকিট তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই সেই সমস্ত বিধায়কদের সঙ্গে তাঁর পরিচিতির কথা কোন বায়বীয় বিষয় না। তবে এরমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়ে প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে পিসি-ভাইপোর বিরুদ্ধে হুংকার ছাড়ছেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী। যেনতেন প্রকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার মসনদ থেকে সরানোই তাঁর লক্ষ্য।

এদিন সেই হুংকারে নতুন সংযোজন, ১১০-১২০ জন বিধায়কদের সঙ্গে তাঁর যোগের কথা! অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর কথা বলা কোনও নতুন বিষয় নয়। এই মুকুলই গত মাসে বিধাননগরের মেয়র তথা রাজারহাট গোপালপুরের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তর বাড়িতে লুচি-আলুর দম খেতে গিয়ে সরগরম করে দিয়েছিলেন বঙ্গ রাজনীতি। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের ভাঙিয়ে বিজেপিতে নিয়ে যেতে মুকুল সিদ্ধহস্ত তাও ইতিমধ্যে প্রমাণ করেছেন। বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খা-কে তৃণমূল থেকে ভাঙিয়ে গেরুয়া শিবিরে দাঁড় করিয়েছেন মুকুলই। বোলপুরের বিদায়ী সাংসদ অনুপম হাজরার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। আর এদিন রানাঘাটের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার্তা দিয়ে গিয়েছেন ২৩ মে আবার তাঁর সরকার ক্ষমতায় এলে নানা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবেন। সেইদিনই সন্ধ্যায় ১১০-১২০ জন বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক লড়াইয়ে উষ্ণতা আরও বাড়িয়ে দিলেন মুকুল রায়।

নীল রায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.