গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও প্রবীন বিজেপি নেতা মনোহর পার্রীকর আজ বিকেলে ৬৩ বছর বয়সে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন তিনি অগ্নাশয় ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও গোয়ার কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করছিলেন অনেক এর প্রশংসা করেছেন। তাঁর নাকের উপরে টিউব থাকা অবস্থাতেও কয়েকদিন আগে মান্ডোভি নদীতে অটল সেতুরর উদ্বোধনের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখা কিংবা বিধান সভায় বাজেট পেশ সবই পালন করেগেছেন।
পার্রীকরের যাত্রা একজন আরএসএস প্রচারক হিসাবে তৃণমূল স্তর থেকে শুরু করে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দায়িত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত থেকেছে। তাঁর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মেয়াদেই পাকিস্তান দখলকৃত কাশ্মিরে ভারত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায়।
আইআইটি-বম্বে থেকে মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং এ স্নাতক পার্রীকরই দেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যিনি কোনো আইআইটির প্রাক্তনী। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উন্নয়নমূলক উদ্যোগের জন্য তিনি সুপরিচিত ছিলেন। গোয়ার বিখ্যাত অটল সেতুর ধারনা থেকে নির্মান তত্ত্বাবধান সবই তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত ছিল। তাঁর নেতৃত্বাধীন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলি গৃহ আধার (মহিলাদের জন্য মাসিক আয় প্রদান) এবং লাডলি লক্ষ্মী (মেয়েদের বিয়ের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান) তাঁকে উপকূলীয় রাজ্যে জনপ্রিয় করে তুলেছিল।
রাজ্যে অবৈধ খনন এর বিরুদ্ধে তাঁর দীর্ঘ প্রচারাভিযানের জন্য পার্রীকরকে স্মরণ করা হবে। বিরোধী নেতা হিসেবে তিনি কংগ্রেস পার্টির বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন। এই বিষয়ে তার পাবলিক একাউন্টস কমিটি (পিএসি) প্রতিবেদনটি বিচারপতি এমবি শাহ কমিশনের দ্বারা রাজ্যের লৌহ আকরিক খনন কাজকে একটি তদন্তের দিকে এগিয়ে দেয়।
২০১৩ সালে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি প্রথম জনসমক্ষে নরেন্দ্র মোদিকে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলের মুখ হওয়া উচিত বলে মত প্রকাশ করেছিলেন।
কঠোর পরিশ্রমী এবং সংগঠিত নেতা হিসাবে পরিচিত, পার্রীকরের মৃত্যু বিজেপি ও বিরোধী দলকে সমানভাবে শোকাহত করেছে।
এক সাক্ষাত্কারে মনোহর পার্রীকর বিখ্যাতভাবে বলেছিলেন, “আমার শেষ শ্বাস পর্যন্ত আমি গোয়ার সেবা করবো।” তাঁর প্রতিটি প্রতিশ্রুতির মতো তিনি এটিকেও রাখলেন।