মঙ্গলবার উনিশের লোকসভার নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। আর বুধবারই এই ইস্তাহারকে ‘মিথ্যেকথার ও দ্বিচারিতার ইস্তাহার’ বলে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘এটি ঘোষণাপত্র ( ইস্তাহার ) নয়, ধোঁকাপত্র’। মোদীর দাবি, এই ইস্তাহারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
বুধবার পশ্চিমবঙ্গে ভোট প্রচারে আসছেন মোদী। প্রথমে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি ও তারপর ব্রিগেডে সভা করবেন তিনি। তার আগে বুধবার সকালে অরুণাচলপ্রদেশের পাসিঘাটে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন মোদী। সেখানেই এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিনের সভায় দাঁড়িয়ে মোদী বলেন, “এঁদের ( পড়ুন কংগ্রেসের ) কী হয়েছে? একদিকে যখন চৌকিদার নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছে, সেখানে অন্যদিকে ক্ষমতালোভী কংগ্রেস এত নীচে নেমে গিয়েছে। কংগ্রেস কি মানুষের সাথে হাত মিলিয়েছে? নাকি দুষ্কৃতীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।” নিজেকে চৌকিদার বলার সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের ‘নামদার’ বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
উত্তর-পূর্বের যেসব রাজ্যে কংগ্রেসের সরকার রয়েছে, সেই রাজ্যগুলির উন্নয়নের জন্য কংগ্রেস কিছু করেনি বলেই মন্তব্য করেছেন মোদী। তিনি বলেন, “এর আগে এবং বর্তমানেও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে যখনই কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছে, তারা এখানকার মানুষের উন্নতির জন্য কিছু করেনি। উনিশের লোকসভা নির্বাচন হলো সত্যি এবং মিথ্যের লড়াই। একদিকে রয়েছে এমন দল যারা কাজ করে, অন্যদিকে যারা মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেয়। একদিকে রয়েছে এমন দল যাদের আপনারা বিশ্বাস করতে পারেন, অন্যদিকে এমন দল যারা দুর্নীতিতে ভরা।”
মঙ্গলবার একদিকে মা সনিয়া গান্ধী ও অন্যদিকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে বসিয়ে নিজেদের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। এই ইস্তাহারে কগ্রেসের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, সরকারে এলে গরিব পরিবারগুলিকে বছরে ৭২ হাজার টাকা দেওয়া হবে। ১০০ দিনের কাজের বদলে একই প্রকল্পে ১৫০ দিনের কাজ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারে। বেরোজগারি সমস্যা মোকাবিলায় ইস্তাহারে ঘোষণা করা হয়, সরকারি দফতরে ২২ লক্ষ শূন্য পদে লোক নিয়োগ করা হবে। যে সব কৃষক ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। ফলে ঋণ ফেরতে অপারগ কৃষকদের জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না বলে আশ্বাস রয়েছে ইস্তাহারে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ‘গব্বর সিং ট্যাক্স’কে যথার্থ গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্সে পরিবর্তিত করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ একাধিক হারের বদলে একই হারে ট্যাক্স নেওয়া হবে যার ফলে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন কংগ্রেস সভাপতি।