অগ্নিপথ নিয়োগ প্রকল্পের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ঘটে চলা বিক্ষোভ ও হিংসার মধ্যেই ভারতীয় সেনা বিষয়ক দফতরের অতিরিক্ত সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরী জানিয়ে দিলেন, অগ্নিপথ প্রকল্পের রোলব্যাকের কোনও প্রশ্নই নেই। একইসঙ্গে হিংসার নিন্দা করে তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনী হিংসার নিন্দা করে। দাঙ্গাকারীরা সেনাবাহিনীর অংশ হবে না।
অনিল পুরী বলেছেন, শৃঙ্খলাই ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভিত্তি। অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের কোনও স্থান নেই। প্রত্যেকেই একটি শংসাপত্র দেবে যে তাঁরা প্রতিবাদ অথবা ভাঙচুরের অংশ ছিল না। পুলিশ ভেরিফিকেশন ১০০ শতাংশ, এটা ছাড়া কেউ জয়েন করতে পারবে না।”
অগ্নিপথ নিয়োগ প্রকল্পের স্বপক্ষে রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন ভারতীয় সেনার তিন বাহিনী— পদাতিক, বায়ুসেনা এবং নৌসেনার শীর্ষকর্তারা। লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ভাইস অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠী, এয়ার মার্শাল এসকে ঝা। এদিন ভাইস অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠী বলেছেন, এই বছরের ২১ শে নভেম্বর থেকে, প্রথম নৌ-অগ্নিবীররা প্রশিক্ষণ নিতে, ওড়িশার আইএনএস চিল্কায় পৌঁছতে শুরু করবে। মহিলা এবং পুরুষ উভয় অগ্নিবীরদের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
অতিরিক্ত সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরী জানিয়েছেন যে সেনার অন্দরে এই পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা আজ থেকে নয়, কার্গিল যুদ্ধের সময় থেকেই। তখন কারগিল ওয়ার কমিটি বলেছিল, আমাদের দেশের ভিতরে যে সেনা রয়েছে, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে তার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, “আজ আমাদের গড় বয়স ৩২ বছর, কিন্তু সেই সময় আমাদের সেই বয়স কমিয়ে ২৬ বছর করতে বলা হয়েছিল। এই প্রকল্পটি আনার পিছনে একমাত্র উদ্দেশ্য হ’ল আরও বেশি সংখ্যক যুবক এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারে।”
লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের দেশের ৫০ শতাংশ মানুষের বয়স ২৫ বছরের নীচে হবে। এটি আমাদের এত বড় ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড, আমাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীকে এর প্রতিফলন হওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, আমাদের আগের প্রজন্ম প্রযুক্তির সাথে এতটা বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না, যখন আগামী প্রজন্ম আমাদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকবে। তাদের প্রযুক্তি সম্পর্কে এই ধারণা থেকে আমরা উপকৃত হতে পারি। তিনি এই বোঝাপড়াকে কাজে লাগিয়ে দেশকে রক্ষা করতে পারেন। সেনাবাহিনীকে তরুণ করে তুলতেই এই স্কিম আনা হয়েছে। তিনি বলেন, এই পরিকল্পনা কোনো এক ব্যক্তি করেনি। এটাই পুরো সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের কাজ একদিনে হয়নি, গত দু’বছর ধরে ভাবা হচ্ছে।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে অগ্নিপথ পরিকল্পনা কীভাবে আরও উপকারী? এ বিষয়ে তিনি জানান, আমরা এই প্রকল্পের আওতায় ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সী যুবকদের নিয়োগ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মানুষের সাম্প্রতিক চাহিদার কথা মাথায় রেখে গতকালের আগের দিন এর বয়স ২১ বছর থেকে বাড়িয়ে ২৩ বছর করা হয়। কারণ যুব সমাজই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ এবং আমরা এর সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, অগ্নিপথ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত যুবকদের মধ্যে ২৫ শতাংশ দেশের সেবা করে যাবে, বাকি ৭৫ শতাংশ যুবক এই প্রকল্প থেকে দক্ষতা গ্রহণ করবে। সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণও তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য খুব সহায়ক হবে।