কাশ্মীরি পণ্ডিতরা শীঘ্রই ঘরে ফিরবে, ইঙ্গিতে জানিয়ে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেছেন, যারা ঘরে ফিরতে চান তাদের ঘরে ফেরানোর দায়িত্ব আমার৷ জম্মু-কাশ্মীর লাদাখ দেশের সঙ্গেই যুক্ত৷ আর্টিকেল 370 এবং 35A নিষ্ক্রিযকরণ নিয়ে সারা বিশ্বে ঝড় উঠে গিয়েছে৷ জম্মু ও কাশ্মীর বিশেষ অধিকার হারিয়েছে, রাজ্যের মর্যাদা হরিয়েছেন বর্তমানে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর৷ লাদাখও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল৷ মোদীর সাফ কথা, জম্মু ও কাশ্মীর ভবিষ্যতে পূর্ণ রাজ্যও হতে পারে৷
কাশ্মীরী পণ্ডিতদের ঘরে ফেরানোর পুরানো প্রতিশ্রতি দিয়েছিল মোদী সরকার৷ 2014 সাল থেকে 2019 সাল পর্যন্ত প্রথম মোদী সরকারের আমলে তা সম্ভব না হলেও 2019 সাল থেকে মোদী সরকার 2.0 তে এই সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে৷ কারণ ইতিমধ্যেই আর্টিকেল 370 এবং 35A নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে৷ সেক্ষেত্রে কাশ্মীরী পণ্ডিতদের নিজভূমে ফিরে যাওয়ার পথও তৈরি করলেন মোদী৷
মোদীর শাসনকালের শুরুর দিকে কিন্তু কাশ্মীরী পণ্ডিতরা বঞ্চিতই থেকে গিয়েছেন৷ বাস্তুভূমিতে তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হবে৷ শুধুমাত্রই ঘরে ফেরা নয়, উপত্যকায় তাঁদের ইজ্জতও ফিরিয়ে দিতে হবে – একসময় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোট চেয়েছিল বিজেপি৷ ২০১৪ সালে পার্টির ইস্তাহারে ছাপা হয়েছিল এই অমোঘ বার্তা৷ দেড় লাখ কাশ্মীরি পণ্ডিত এবং তাদের পরিবার ওই ইস্তাহার পড়ে উদ্দেলিত হয়ে নরেন্দ্র মোদীর জয়ধ্বনী দিয়েছিলেন৷ কিন্তু পাঁচ বছরের মধ্যে স্বপ্নের সমাপ্তি৷ পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার ঘটানার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী যতই যুদ্ধের হুঙ্কার ছাড়ুক – কাশ্মীরি পণ্ডিতরা তাঁদের বাস্তুভূমির দিকে তাকিয়ে আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন৷ যদিও বৃহস্পতিবার তাঁদের মনে কিছুটা আশার আলো সঞ্চারিত করেছেন মোদী৷
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যা সংক্রান্ত মামলাগুলি নিযে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তেমন ভাবে এগোতেই পারেনি এতদিন৷ মন্ত্রকের আওতায় জম্মু-কাশ্মীর দফতরের কাছে এই বিষয়ে তেমন কোনও তথ্যের খোঁজ পায়নি সংবাদমাধ্যম৷ উপত্যকা থেকে কত পণ্ডিত পরিবারকে পালিয়ে আসতে হয়েছে, তেমন কেনও তথ্যও পাওয়া যায়নি৷ বরং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জম্মু ও কাশ্মীর দফতর জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের কাছে ওই তথ্য সন্ধান করার পরামর্শ দিয়েছে৷ যা শুনে একসময় অনেকেই হেসেছেন৷
কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকার কী করেছে? এই প্রশ্নটারা বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে৷ ‘ইন্ডিয়া টুডে’র একটি প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য তিনটে সরকারি প্রকল্প চলছে৷ প্রথমটি, মাসিক অর্থ সাহায্য এবং শুকনো খাদ্যদ্রব্য রেশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়৷ দ্বিতীয়টি, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ‘রিলিফ প্যাকেজ’ এবং তৃতীয়টি ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী ‘দেব প্যাকেজ ৷’ ‘ইন্ডিয়া টুডে’-র আরটিআই-এর জবাবে মোদী সরকার জানিয়েছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে পণ্ডিতদের জন্য ৬ হাজার বাড়ি বানানো টাকা রাজ্যের সরকারকে দেওয়া হয়েছে৷ ২০১৬ সালের মধ্যেই ১১৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে৷ বৃহস্পতিবারের পর থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবারগুলির অভিযোগ কমবে৷