পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের ৩ মাসের মাইনে বকেয়া রয়েছে। তার মধ্যে কোম্পানির ঘাড়ে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার দেনা। গত দু’দিন ধরে জেট-এর সব বিমান ওঠানামা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ২০ হাজার কর্মীর চাকরি খোয়ানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগে জেট এয়ারওয়েজের পাইলট ও ইঞ্জিনিয়াররা দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা মেলেনি। এ বার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন জেট এয়ারওয়াজের প্রতিনিধি দল।
শনিবার জেট এয়ারওয়েজের সিইও বিনয় দুবে এবং চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার অমিত আগরওয়ালের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দল দেখা করেন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে। এ ছাড়াও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী সুধীর মুঙ্গাতিওয়ার। প্রতিনিধিদলের তরফে অরুণ জেটলির কাছে দু’টি আবেদন করা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, জেটের মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে, এবং তারমধ্যেই পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের বকেয়া মাইনে মিটিয়ে দিতে হবে। বৈঠক শেষ অমিত আগরওয়াল জানিয়েছেন, “আমরা অর্থমন্ত্রীর কাছে মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া তাড়াতাড়ি করার আবেদন জানিয়েছি। তিনি বলেছেন ৪-৫ সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আমরা আরও আবেদন জানিয়েছি, কর্মীরা তিন-চার মাস ধরে মাইনে পাননি। যদি এর মধ্যে বকেয়া মাইনে মিটিয়ে দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা হয়, তো ভালো হতো। এর উত্তরে অরুণ জেটলি বলেছেন, ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।”
কিন্তু অর্থমন্ত্রীর এই আশ্বাসের পরেও বিক্ষোভ থামানো হবে কিনা, সে বিষয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি অমিত আগরওয়াল। তিনি বলেছেন, “এটা বোঝার চেষ্টা করুণ, এর সঙ্গে একটা ইমোশনাল দিকও জড়িয়ে আছে। আমরা অনেকেই প্রায় ২৫ বছর ধরে কাজ করছি। আমি বলতে পারছি না, বিক্ষোভ বন্ধ হয়ে যাবে কিনা। কিন্তু আমরা চেষ্টা করবো, যাতে বিমান পরিষেবা চালু করা যায়।” জেট-এর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকা ইঞ্জিনিয়ার আশিস মোহান্তি জানিয়েছেন, খুব মন দিয়ে তাঁদের সমস্যার কথা শুনেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অরুণ জেটলি বলেছেন, তাঁর প্রধান কাজ হচ্ছে কর্মচারীদের বাঁচানো। কিন্তু তার জন্য যাত্রীদের অসুবিধা হোক, সেটাও আমরা চাই না। আমরা আশা করছি, যা হবে ভালোই হবে।”
ভারতের সবথেকে পুরনো বেসরকারি বিমানসংস্থা এই জেট এয়ারওয়েজ। বুধবার থেকে এই সংস্থার সবরকম পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দেউলিয়া এই কোম্পানিকে লোন দিতে অস্বীকার করেছে সব ব্যাঙ্ক। তাই বাধ্য হয়েই কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে এর মধ্যে। এখন দেখার অর্থমন্ত্রীর এই আশ্বাসের পর জেট-এর ভবিষ্যৎ ঠিক কোন দিকে যায়।