মিলল না আপৎকালীন তহবিল, আজ রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে জেটের সব উড়ান

শত চেষ্টাতেও শিকে ছিঁড়ল না। জরুরি তহবিল না মিললে অচিরেই জেটের উড়ান পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জল্পনা চলছিলই। মঙ্গলবার দিনভর এই নিয়ে চলে চাপানউতোর। সমস্ত রুটের আন্তর্জাতিক পরিষেবা বন্ধ হয়েছিল আগেই, দেশীয় উড়ানেও কোপ পড়ছিল দিনকয়েক ধরে। নয় থেকে বিমানের সংখ্যা শেষপর্যন্ত পাঁচে নেমে যাওয়ার আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে এসেছিল। বুধবার বিকেলেই সংস্থার তরফে ঘোষণা করা হলো, আজ রাত থেকেই বন্ধ হতে চলেছে জেটের সব উড়ান।

জেট আগেই জানিয়েছিল, সংস্থার পুনর্গঠনের জন্য দরকার ৯,৫৩৫ কোটি টাকা। পরিষেবা চালু রাখতে স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন ঋণদাতা গোষ্ঠীর (এসবিআই, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, কানাড়া ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক, ইলাহাবাদ ব্যাঙ্ক) কাছে ৪০০ কোটি টাকার আপৎকালীন তহবিলের আর্জিও জানানো হয়েছিল। কর্মীদের পাঠানো মেল-এ জেট সিইও বিনয় দুবের আশ্বাস দিয়েছিলেন,  সংস্থাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে পুঁজি চাওয়া হয়েছে। অতএব কর্মবিরতিতে না গিয়ে পাইলট ও ইঞ্জিনিয়াররা যেন ধৈর্য রাখেন।

এই মুহূর্তে বাজারে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার দেনা রয়েছে জেটের। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ঋণদাতারা জেটের পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা আনতে দায়বদ্ধ। তবে কোনও কিছুই চূড়ান্ত না হওয়ায় সবই আলোচনার স্তরে রয়েছে। গতকালই মুম্বইতে এয়ারওয়েজের বোর্ড মিটিং হয়। জানা গিয়েছিল, দ্রুত সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের সচিবকে। এ দিকে গতকালই বিএসই-তে ১৮.৫৬% পড়ে যায় জেটের শেয়ার দর। বিএসই দাঁড়ায়  ২৪১.৮৫ টাকায়।

প্রবল অনিশ্চয়তার মধ্যে খবর মিলেছিল ফের দায়িত্বে ফিরতে পারেন নরেশ। নোটিশে বলা হয়, ৭৫% পর্যন্ত অংশীদারির জন্য আগ্রহ দেখাতে পারেন লগ্নিকারীরা। ঋণদাতাদের হাতে শেয়ার রয়েছে ৫১%। বাকি ২৪ শতাংশ কে দেবেন নরেশ না এতিহাদ, তাই নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। তবে সব আশায় জল ঢেলে ঋণভারে জর্জরিত জেটের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন নরেশ গয়াল ও তাঁর স্ত্রী অনিতা।  এয়ারওয়েজের বোর্ডেও আর তাঁদের কোনও শেয়ার থাকছে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন গয়াল।

ঋণের দায়ের পাশাপাশি জ্বালানি জটে রোজই বসে যাচ্ছে জেটের কোনও না কোনও বিমান। ১১ এপ্রিল কলকাতা থেকে শেষ দু’টি উড়ানও বন্ধ হয়েছে। আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ  ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত। বিমান পরিবহণ সচিবের দাবি, এখন চালু মাত্র ৫টি বিমান। তবে আজ রাত থেকে সেগুলোও বাতিল হচ্ছে। সূত্রের খবর, শেষ উড়ান চলবে অমৃতসর থেকে মুম্বই পর্যন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.