ঘটনা (১)ঃ জি নিউজের সাংবাদিক সুধীর চৌধুরী (Sudhir Chowdhury) একটি টিভি শো তে মৌলবাদী জেহাদ নিয়ে আলোচনা করলেন..
ধর্মীয় অনুভূতি আহত হওয়ার অভিযোগ দায়ের করলেন কেরালার পি গাভাস, জয়েন্ট সেক্রেটারি অফ দ্য অল ইন্ডিয়া ইয়ুথ ফেডারেশন, কেরালা সিপিঅাই এর যুব শাখা! অথচ, ‘হিন্দু রাষ্ট্র ইজ রেপিস্ট‘ (Hindu state is rapist) লেখা ব্যানার নিয়ে এরাই আবার কোলকাতার রাজপথে নামে!
ঘটনা(২)ঃ টাইমস নাউ (Times Now) এর প্রতিবেদন অনুযায়ী পালঘরের সাধু হত্যার পেছনে বামপন্থীদের যে ইন্ধন ছিল, তার জোরালো ইঙ্গিত পাওয়া গেল। বামপন্থীরাই আদিবাসী যুবকদের হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল……এই মর্মে গ্রামবাসীরা অভিযোগ জানিয়েছেন।
কিছু বুঝলেন??
এই প্রসঙ্গে কেরালার রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের একটি উক্তি মনে পরে গেল…… স্বাধীন ভারতে জিন্নার মুসলিম লিগ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ায়, সেই দলের মানুষ গুলো পরবর্তীকালে কমিউনিস্ট পার্টির সাথে মিশে যায়।
আসলে, একশো বছর আগে সুদূর তাসখন্দে অশুভ আঁতাতের যে বীজ বপন হয়েছিল, আজ তা সমস্ত শাখাপ্রশাখা দিয়ে সমাজে বিষ ছড়াতে ব্যস্ত। সুলতান আহমেদ খান তারিন, মহম্মদ শফি, মহম্মদ আলি প্রভৃতি মুজাহিদ হিসেবে খিলাফৎ আন্দোলনে যুক্ত হয়ে জেহাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ‘ইসলামীক আটোমান খলিফেট‘ এর স্বপ্নকে স্বার্থক করতে তুর্কির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরে ১৯২০ সালে জেহাদী সাথীদের সাথে কাবুল পর্যন্ত পৌঁছান। কাবুলে রুশ কমিউনিস্ট নেটওয়ার্কের সংস্পর্শে এসে মস্কো আসেন এবং অবনি মুখার্জী ও মানবেন্দ্র রায় এর সাথে যুক্ত হোন এবং ঐ বছরেই সকলে মিলে তাসখন্দে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। ঐ সব ইসলামী জিহাদী মনোভাবাপন্ন মানুষদের সাথে ভারতের কমিউনিস্টদের আত্মিক সম্পর্ক কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠার দিন থেকেই। ভারতের বামপন্থীদের ইন্টেলেকচুয়াল পাইয়োনিয়ার মানবেন্দ্র নাথ রায়ের মতে ভারতবর্ষে জাতির ধারনা কোনো কালেই ছিল না, ব্রিটিশরা আসার পরই নাকি ভারতে জাতির ধারনার উন্মেষ ঘটে! অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, ভারতে বামপন্থার পথ চলা শুরু হয়েছিল সুপ্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তাচ্ছিল্যভরে দূরে সরিয়ে রাখার মাধ্যমে। ১৯২২-এ মানবেন্দ্রনাথ রায় (Manabendranath Roy) , আরেক প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য অবনী মুখার্জি (Abani Mukherjee) -র সহায়তায় একটি বই লেখেন―“India in Transition”। সেখানে স্বামী বিবেকানন্দ বিষয়ে ভারতের কমিউনিস্টদের আদি মূল্যায়ন পাওয়া যায়। এখানে লেখা হল, স্বামী বিবেকানন্দ, তাঁর আদর্শ-ভাবনা, সেই আদর্শে তৈরি স্বাধীনতা সংগ্রাম, সেই সময় ব্রিটিশ শাসনকে ভারতের সব সমস্যার মূল কারণ ভাবা―এই সবকিছুই প্রতিক্রিয়াশীল সামাজিক শক্তি এবং শ্রেণী সংগ্রামের পথে বাধা। (India in Transition/Chapter 7-Political Movement II).
গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস (১৯৪৬) এর মুল কারিগর নরপিশাচ সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভায় উত্থাপিত no confidence motion এর ব্যর্থতার ইতিহাসের দিকে চোখ রাখলে দেখা যায় দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেদিন ও বামপন্থীরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। আইনসভার সেই তিনজন বামপন্থী সদস্যের নাম ছিল-
কমঃ জ্যোতি বসু
কমঃ রতনলাল ব্রাহ্ম
কমঃ রূপনারায়ন রায়
১৯৬২ ইন্দো-চীন যুদ্ধের দগদগে ক্ষত ও গ্লানি মোচনের জন্য যখন আপামর ভারতবাসী উন্মুখ, সেই যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এক বাম বুদ্ধিজীবী প্রতুল মুখোপাধ্যায়, লিন পিয়াও এর অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে রচনা করলেন “তরীতে নির্ভর কর্ণধার” নামক একটি কবিতা। কবিতাটির শেষাংশ একটু তুলে ধরলাম……
চীনের চেয়ারম্যান মাও
আমাদের চেয়ারম্যান মাও
চীনের পথ সে তো আমাদের ও পথ
সেই পথে আগুয়ান ভারতের সর্বহারা।।
যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বামপন্থী নেতা নাম্বুদিরিপাদ কি বলছেন শুনুন…….
“….. the Chinese had entered territory that they thought was theirs and hence there was no question of aggression.”
(A Traveller and the Road – The Journey of an Indian Communist, Mohit Sen). শুধু তাই নয়, কেরালার বাম নেতা ও জে জোসেফের নেতৃত্বে ঘোষনা করা হয়, এই যুদ্ধে আহত ভারতীয় সেনাদের রক্তদান পার্টি বিরোধী কার্যকলাপ বলে পরিগনিত হবে। ভি এস অচ্যুতানন্দ রক্তদানের পক্ষে সওয়াল করলে, তাকে পার্টি বিরোধী কার্যকলাপের দায়ে অভিযুক্ত করে পার্টির সেন্ট্রাল কমিটি থেকে অপসারিত করা হয়।
আজও সমানে বহে চলেছে একই ট্রাডিশন। ২০১৭ সালে সিপিআইএমের কেরালা রাজ্য সম্পাদক কোদিয়ারি বালাকৃষ্ণনের নিজের দেশের সেনা সম্পর্কে বিবমিষা উদ্রেককারী মূল্যায়ন শুনলে বিষ্ময়ে হতবাক হতে হয়। বালাকৃষ্ণনের মন্তব্য অনুযায়ী ভারতীয় সেনার কাজ মহিলাদের অপহরণকরে ধর্ষণ করা! দেশ বিরোধিতার আকর বিকৃত রাজনৈতিক আদর্শে উজ্জীবীত হয়ে আরব ও চৈনিক সাম্রাজ্যবাদের উপর আস্থাশীল বিশ্বাসঘাতক বামেদের প্রতিনিধি জে এন ইউ এর প্রাক্তন ছাত্রনেতা শার্জিল ইমাম শাহীনবাগ অস্থিরতার মধ্যমনি হয়ে আসাম সহ সমগ্র উত্তর পূর্ব কে আমার আপনার মাতৃভূমি থেকে আলাদা করার দাবি তুলছে। দেশের কিছু উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এরাই কাশ্মীর মাঙ্গে আজাদী; হামে চাহিয়ে আজাদী, জিন্নাওয়ালী আজাদীর স্লোগান তুলেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, নিজেদের বিকৃত রাজনৈতিক উত্তরাধিকার কে ছাপিয়ে আরো একধাপ এগিয়ে স্লোগান তুলছে “ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে, ইনশাল্লাহ ইনশাল্লাহ।”
জাতীয়তাবাদী চিন্তন ও মননে সিক্ত প্রতিটি দেশবাসী জানতে চায়, এই চরম মৌলবাদ, চুড়ান্ত অসহিষ্ণুতা আর অপরিসীম দেশ বিরোধিতার শেষ কোথায়?
ডঃ তরুণ মজুমদার (Dr. Tarun Majumdar)।