ভারতীয় গবেষকদের একটি দল রক্তে ক্যান্সারের (লিউকেমিয়া) নিরাময়ের উপায় খুঁজে বের করার পন্থা হিসাবে, হাড়ের মজ্জা এবং রক্তের রোগের গবেষণা করার জন্য একটি মাউস মডেল তৈরি করেছে।, খবর টাইম অফ ইন্ডিয়া।
জাওয়াহারলাল নেহেরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ (জেএনএনএএসএসআর) -এর গবেষক দলটির নেতৃত্বে ছিলেন মনিষা এস ইনামদার। আমেরিকান সোসাইটি অফ হেমাটোলজি’র একটি জার্নাল ‘ব্লাড’ এ গবেষণা দলটির পরীক্ষালবদ্ধ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
ইনামদারের গবেষণাগারটিতে গবেষকরা অসৃজ (সংস্কৃত ভাষায় অর্থ রক্ত) নামে একটি স্টেম সেল প্রোটিন আবিষ্কার করেছে, যা মায়ালো-প্রলিফারেটিভ রোগ প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মায়ালো-প্রলিফারেটিভ হচ্ছে এমন একটি শর্ত যা পরিণত রক্ত কোষগুলির অত্যধিক উৎপাদনকে তরাণ্বিত করে। অনিয়ন্ত্রিত ও অধিক পরিমানে উৎপাদিত পরিণত রক্ত কোষের মিউটেশন হওয়ার প্রবণতা বেশি , যা পরে ক্যান্সারযুক্ত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ৯০ শতাংশ ক্যান্সার একটি কোষ উৎপাদন নিয়ন্ত্রণকারী প্রোটিন পি৫৩(p53) র প্রভাবে উৎপন্ন হয় বলে মনে করা হয়। ইনামদার আরো বলেছেন “পি৫৩(p53) এর কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন বা মিউটেশন না হওয়া সত্ত্বেও,আমরা দেখতে পাই অসৃজ মাত্রা কম ছিল,এর ফলেই নতুন কোষগুলি অননিয়ন্ত্রিত ভাবে উৎপাদিত হয়েছিল”।
পি৫৩ কে রক্ষা করে অসৃজ নামের গবেষণা পত্রিকার প্রথম লেখক সালোনি সিনহা। প্রথম লেখক সালোনি সিনহার মতে “অসৃজের অনুপস্থিতিতে পি৫৩(p53) নষ্ট হয়ে যায় এবং রক্তের স্টেম সেল বেড়ে যায় এবং যা থেকে ক্যান্সার হয়। আবার পি৫৩(p53)র মধ্যে মিউটেশনের ফলে ক্যান্সার হতে পারে। যাইহোক, পি৫৩(p53)র মিউটেশন ছাড়া কিছু ক্যান্সার কিভাবে হয় সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বিভ্রান্তিতে রয়েছে। এটা কীভাবে ঘটতে পারে তার ব্যাখ্যা করে আমাদের গবেষণাটি”।
ইনামদারের মতে এই গবেষণা রোগনির্ণয়ে এটি নতুন পথ তৈরির সাথে রক্ত ক্যান্সারের প্রতিকার করতে পারে।
অসৃজ কিভাবে কাজ করে তা অধ্যয়ন করার জন্য গবেষণা দলটি একটি মাউস মডেল ডিজাইন করেছে। অসৃজ জিন চিহ্নিত করার কৌশল হিসেবে মাউসটি তৈরি করা হয়। এরপর ল্যাবটিতে চিহ্নিত অঞ্চলটি মুছে ফেলে দেখানো হয় যে জিনের একটি বা উভয় কপি মুছে ফেলায় কোনো আপাত প্রভাব নেই। তাদের পূর্ববর্তী কাজের উপর ভিত্তি করে, তারা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল যে মাউস রক্তের ক্যান্সার বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইনামদারের কথায় রক্ত ও অন্যান্য ক্যান্সারের উৎস ও ক্লিনিকাল প্রগতির অনুসন্ধানের জন্য গবেষণায় বৈপ্লবিক ভূমিকা নেবে। তিনি আরো জানান, এই গবেষণা ক্যান্সার ও নিউরো-ডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডার সহ অসৃজ এবং প53 দ্বারা প্রভাবিত বিভিন্ন রোগের ঔষধ ও চিকিৎসা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করবে।