দেশকে স্বনির্ভর হওয়ার ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই পথে হেঁটে এবার আত্মনির্ভর হতে চলেছে ভারতীয় রেলও। ২০৩০ সালের মধ্যে গোটা দেশের রেলচালনার শক্তির যোগান নিজেই দেবে ভারতীয় রেল, এমনই সংকল্প নেওয়া হয়েছে। এজন্য বিশেষ পরিকল্পনা শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে গোটা দেশে ট্রেন চালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় ২১ বিলিয়ন ইউনিট। সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ বা শক্তি উৎপাদন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে অন্য কোনও সংস্থার ওপর নির্ভরশীল হতে না হয়। এজন্য ২০ গিগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রেলের উদ্বৃত্ত জমিতে বসানো হবে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্যানেল বলে জানানো হয়েছে।
রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানান বায়ু অথবা সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেষ্টা চালাচ্ছে রেল, এতে শক্তিক্ষেত্রে রেল স্বনির্ভর হতে পারবে। মেড ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পে এই কাজ হবে। পুনর্নবিকরণ বিদ্যুত উৎপাদনের মাধ্যমে রেল নিজের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ ও শক্তি নিজেই সংগ্রহ করে নিতে পারবে। এজন্য ২০ গিগাওয়াটের সোলার প্যানেল বসানোর প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী জানান, আগামী বছরগুলি রেলের ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণ করা হয়ে যাবে। তখন বিদ্যুতের চাহিদা আরও বাড়বে রেলে। ফলে অন্য কোনও সংস্থার ওপর নির্ভর না করে, রেল এই ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হতে চাইছে।
তিনি জানান, দেশ জুড়ে রেলের যে জমি পড়ে রয়েছে, সেখানে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এজন্য রেললাইনের দুধারের রেলের জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করা হবে। গোটা দেশের রেল চালাতে যে পরিমাণ শক্তি প্রয়োজন, তা তৈরি করা হবে। মনে করা হচ্ছে ২০৩০ সালে গোটা দেশে রেল চালাতে ৩২ মিলিয়ন ইউনিট প্রয়োজন হবে। এই পরিমাণই রেল তৈরি করবে নিজের জোরে।
এই প্রকল্প রূপায়িত করতে ইতিমধ্যেই সোলার পাওয়ার ডেভেলপার সম্মেলন আয়োজন করেছে রেল। রেলমন্ত্রকের তরফে এই বিষয়ে একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। রেলের পতিত জমিতে সোলার প্যানেল বসানোর ক্ষেত্রে মন্ত্রক সবধরণের সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।
এছাড়াও লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে শূণ্য পরিমাণ কার্ন ডাই অক্সাইড নির্গমনের। রেল চালানোর ক্ষেত্রে পরিবেশ বান্ধব হওয়াকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাই সৌর বিদ্যুত বা বায়ু বিদ্যুতকে কাজে লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে, যা একেবারেই পরিবেশ বান্ধব। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতীয় রেল জিরো কার্বন এমিটার হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে।