জলদস্যু দমনের নামে প্রায়ই ভারত মহাসাগরে ঢু মারছে চিনা রণতরী। লালফৌজের উদ্দেশ্য যে সাধু নয়, তা বুঝতে মোটেও অসুবিধা হচ্ছে না ভারতের। লাদাখে কমিউনিস্ট দেশটির আগ্রাসন সাফ বুঝিয়ে দিয়েছে যে কোনওভাবেই সম্প্রসারণবাদী নীতি থেকে পিছু হটবে না বেজিং। তাই ‘ড্রাগন’কে রুখে দিতে এবার ভারতীয় নৌবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারে যোগ হচ্ছে সাবমেরিন ধ্বংসকারী আরও চারটি পি-৮আই বিমান (P-8I)।
সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিক থাকলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগামী বছরই ভারতের হাতে আসবে চারটি পি-৮আই বিমান ( P-8I Neptune)। এছাড়া, ২০২১ সালে এমন আরও ছ’টি বিমান কিনতে আগ্রহী নয়াদিল্লি। পি-৮আই বিমানগুলি ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য বিশেষভাবে তৈরি। উপকূল এলাকায় নজরদারি, শত্রুপক্ষের জাহাজ এবং সাবমেরিনের অবস্থান জানা এবং প্রয়োজনে আঘাত হানতে এই যুদ্ধবিমানগুলির জুড়ি মেলা ভার। বিমানগুলিতে রয়েছে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত করতে সক্ষম অত্যাধুনিক হারপুন ব্লক-২ ক্ষেপণাস্ত্র, হালকা ওজনের টর্পেডো ও ডেপথ চার্জ (সাবমেরিন ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হয়)। শক্তিশালী রেডিও সিগনালের মাধ্যমে যা কিনা শত্রুপক্ষের সাবমেরিন এবং জাহাজ, দুই-ই ধ্বংস করতে সক্ষম।
বর্তমানে তামিলনাড়ুতে নৌসেনার বিমানঘাঁটি আইএনএস রাজালিতে রয়েছে একটি P-8I squadron। সম্প্রতি লাদাখে চিনের সঙ্গে সঙ্ঘাত চলাকালীন এই বিমানের মাধ্যমেই নজরদারি চালানো হয়। ২০১৭ সালে ডোকালামে দুই দেশের বাহিনী যখন মুখোমুখি অবস্থান করছিল, সেইসময়ও নামানো হয় এই বিমান। উল্লেখ্য, দেশের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত সমুদ্রে চিনের দাপাদাপি ঠেকাতে যুদ্ধবিমান, সাবমেরিন ও রণতরী নিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় নৌসেনা। চিনা নৌবহরকে ঠেকাতে কড়া নজরদারি চলছে মালাক্কা প্রণালী থেকে হর্ন অব আফ্রিকা পর্যন্ত। ২০১৮ থেকেই জলদস্যুদের উৎখাত করার অজুহাতে পাকিস্তানের গদর এবং লোহিত সাগরের মুখে অবস্থিত জিবউতি নৌঘাঁটি এলাকায় থেকে মালাক্কা প্রণালীতে চিনা যুদ্ধজাহাজ ঢুকে পড়ে। তারপর সেগুলি ভারত মহাসাগর এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঘোরাবায়ু ঘুরি করতে থাকে।