এই ডুবোজাহাজ গঠনে, কাজে অত্যাধুনিক। পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। রাশিয়া থেকে এই সামরিক ডুবোজাহাজ দশ বছরের জন্য লিজ নিল ভারত। চুক্তি হল ২১ হাজার কোটির। আ্যাকুলা ক্লাসের এই সাবমেরিনের নাম ‘আইএনএস চক্র ৩।’ আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেই এই ডুবোজাহাজ যুক্ত হবে ভারতীয় নৌবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারে।
২০১২ সালে অ্যাকুলা ক্লাসের অ্যাটাক সাবমেরিন (এসএসএন) রাশিয়ার থেকে দশ বছরের জন্য লিজ নেয় ভারত। ৮,০০০ টনের সেই সাবমেরিনের মেয়াদ ফুরনোর আগেই আরও উন্নত অ্যাকুলা ক্লাস টু পর্যায়ের এই নতুন সাবমেরিন ‘চক্র ৩’ হাতে পেতে চলেছে ভারতীয় নৌসেনা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, আইএনএস চক্র ৩ হাতে পাওয়ার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলেছে দীর্ঘদিন। নতুন সাবমেরিন হাতে আসার আগে ২০২৫ সাল পর্যন্ত আইএনএস চক্র ডুবোজাহাজই কাজে বহাল থাকবে। প্রয়োজনে বাড়ানো হতে পারে তার মেয়াদ। পরে সে জায়গা নেবে আইএনএস চক্র ৩। নতুন এই ডুবোজাহাজ ভারত মহাসাগরে চিনা নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে শক্তপোক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। যদিও এই ডুবোজাহাজের গঠনগত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, তবে সূত্রের খবর আইএনএস চক্র ৩ অনেক বেশি উন্নত পর্যায়ের ও কার্যকরী।
ভারতের নৌসেনার ভাণ্ডারে এখন তিনটি রুশ ডুবোজাহাজ রয়েছে। ১৯৮৮ সালে পরমাণু অস্ত্রবাহী আইএনএস চক্র সাবমেরিন লিজ নিয়েছিল ভারতীয় নৌসেনা। তিন বছরের জন্য ছিল সেই চুক্তি। এর পর ২০১২ সালে আরও উন্নত পরমাণু অস্ত্রবাহী সামরিক ডুবোজাহাজ আইএনএস চক্র-২ লিজ নেয় ভারত। ২০২৫ সালের আগেই শেষ হচ্ছে তার মেয়াদ। সমুদ্রে সুরক্ষার ভিত মজবুত করতে এ বার আরও উন্নত ডুবোজাহাজ চলে আসছে ভারতের হাতে।
আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে এসএসএন পর্যায়ের সাবমেরিনগুলিতে সাধারণ ভাবে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয় না। ব্যালিস্টিক মিসাইলবাহী এসএসবিএন সাবমেরিন যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। অরিহন্ত গোত্রের দ্বিতীয় সাবমেরিন অরিঘাত ২০২১ সালের মধ্যেই ভারতীয় নৌসেনার হাতে চলে আসার কথা। তা ছাড়া এপ্রিলের শেষেই ভারতীয় নৌসেনা পেয়ে যাবে স্করপিন পর্যায়ের ডুবোজাহাজ খান্ডেরি। পরমাণু অস্ত্রবাহী ব্যালিস্টিক এবং অ্যাটাক, এই দু’টি গোত্র মিলিয়ে এই মুহূর্তে চিনের হাতে আছে দশটি সাবমেরিন, যা ভারতের থেকে অনেকটাই বেশি। তাই ভারত মহাসাগরে সুরক্ষা বহুগুণ বাড়ানোর জন্য নতুন এই ডুবোজাহাজ ভারতের অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠবে বলেই মনে করা হচ্ছে।