সেই সেপ্টেম্বর থেকে খোঁজ নেই বিক্রমের চাঁদের মাটিতে ভারতের চন্দ্রযান নামতে দেখার জন্য সারা রাত অপেক্ষা করেছিল ভারতবাসী। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঘটে যায় অঘটন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে। তারপর চলেছে অনে খোঁজ। ইসরোর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে নাসাও। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
নাসা-র দিকে তাকিয়ে ছিল সবাই। কিন্তু মার্কিন গবেষণা সংস্থাও জানিয়ে দেয় যে তারা বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পায়নি। শুধু এটুকু জানা গিয়েছিল বিক্রম সফট ল্যান্ডিং করতে পারেনি, হার্ড ল্যান্ডিং হয়েছে চাঁদের বুকে।
অবশেষে মঙ্গলবার সকালে সেই প্রতীক্ষার অবসান। খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বিক্রম, বলা ভালো বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ। নাসা সেই তথ্য প্রকাশ করেছে। কিন্তু এই খবরের পিছনে রয়েছে এক ভারতীয়ের নাম। ভারতীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের সাহায্যেই চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ। এমনকি সেই ভারতীয়ের নামের আদ্যক্ষরও ব্যবহার করে তাঁকে বিশেষ সম্মান দিয়েছে নাসা।
তিনি শানমুগা সুব্রহ্মণ্য। এমনিতে মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে চেন্নাই-এর এই যুবকের কোনও সম্পর্ক নেই। পেশায় তিনি মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার। আইটি ফার্মে চাকরি করেন। অ্যাপ ডেভেলপার তিনি।
যখন নাসাও খুঁজে পেল না, তখন এই ইঞ্জিনিয়ার বিষয়টা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। নাসার তোলা ছবি নিয়ে প্রত্যেকদিন রাতে চার থেকে ছ’ঘণ্টা খুঁটিয়ে দেখতেন তিনি। অক্টোবরের শুরুতে একটা জায়গা খুঁজে পান, যেটা সঠিক জায়গা বলে তাঁর মনে হয়। এরপরই নাসাকে পাঠান সেই ছবি। এরপর অপেক্ষা করছিলেন তিনি।
অবশেষে ৩ ডিসেম্বর তাঁর পথে গবেষণা করেই বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেল নাসা। শুধু তাই নয়, প্রথম যে জায়গাটা শানমুগা খুঁজে পেয়েছিলেন, সেটাকে S বলে চিহ্নিত করেছে নাসা।
এদিকে এই বিষয়ে শানমুগা নিজে বলেন, “আমি বিক্রম ল্যান্ডারের কক্ষপথ অনুসরণ করে অনেক কষ্ট করে ধ্বংসাবশেষটিকে চিহ্নিত করেছি। আমার খুব ভালো লাগছে এই বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে। ছোট বেলা থেকে আমার মহাকাশ বিজ্ঞানে আগ্রহ ছিল। আমি কোনও দিনও কোনও রকেট লঞ্চ মিস করিনি। সবকটি দেখেছি।” ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “আমি আমার ল্যাপটপে চাঁদের সেই এলাকার আগের ছবি ও নাসার প্রকাশিত নতুন ছবিটি রেখে তুলনা করি। আমি সোশ্যাল মিডিয়ার আরও অনেকের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করে তারপর নাসাকে এই বিষয়ে জানাই।”