বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর সন্ত্রাস বেড়েই চলেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ চ্যাপ্টার দ্বারা প্রকাশিত সদ্য সমাপ্ত মে মাসের মাসিক প্রতিবেদনে সে চিত্র‌ই ফুটে উঠেছে। শুধু এই মে মাসেই ১২টি হিন্দু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লুন্ঠিত হয়েছে, ৪জন হিন্দু খুন হয়েছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪৩৫ একর জমি স্থানীয় ভূমিদস্যুদের দ্বারা বেদখল হয়েছে, ১০ টি মন্দির ভেঙ্গে ধূলিস্যাৎ করা হয়েছে, এমনকি মন্দিরের বিগ্রহ‌ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পায় নি, ৪৩ টি হিন্দু পরিবারকে তাদের বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, ১০ টি হিন্দু পরিবার মৌলবাদী দের চাপে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে, ৪ জন হিন্দু নারীকে অপহরণ করা হয়েছে, ৫ জন হিন্দু নারী ধর্ষণের স্বীকার হয়েছেন, ৮ জন হিন্দু নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে, ৩ জন হিন্দু নারীকে বলপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। মানবাধিকার, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা এই শব্দগুলো যেন পরিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে এতকিছুর পরেও সংখ্যালঘু হিন্দুরা বিচার তো পাচ্ছেই না এমনকি দোষীদের অনেকক্ষেত্রেই সামান্য গ্রেফতার টুকুও করা হচ্ছে না।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সেক্রেটারি জেনারেল শ্রী দীপন মিত্রের মতে বাংলাদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে বিলুপ্ত করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এই ঘটনা পরম্পরাগুলি তাকেই নিশ্চিত করছে। তিনি এই ধরনের ঘটনার সাথে যুক্ত ব্যাক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে উপযুক্ত ন্যায়বিচার দেবার দাবি জানান।

বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের দিনলিপি:-

০১মে,২০২০- একটি ছোট্ট গাছের ডাল ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুসলমান জনগোষ্ঠী একটি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে হামলা করে। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের এই ঘটনায় ঐ হিন্দু পরিবারের প্রতিটি সদস্য‌ই গুরুতরভাবে আহত হয়।

ঐ এক‌ই দিনে মৌলভি বাজার জেলার জুরি পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত আমটাইল গ্রামের শ্রী দীনবন্ধু সেনের পৌলট্রি খামারে হামলা করে প্রায় ৪০লক্ষ টাকার সম্পদ নষ্ট করে উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোইদ ফারুকের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতি।

 ঐ একই দিনে পুলিশ একটি মিথ্যে মামলায় রনি সাত্যার্থী নামে মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র কলেজের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নবী মহম্মদ সম্বন্ধে অপমানজনক কথা বলা হয়েছে এই অজুহাতে সন্ত্রাসীরা এ ছেলেটির বাড়ি হামলা করে এবং বাড়ি থেকে বহু মুল্যবান সামগ্রী লুন্ঠন করে।

 ০৩/০৫/২০২০:  দিনাজপুর পৌরসভার স্থানীয় গুন্ডা মামুন ও তার দলবল মিলে পূর্ণ চন্দ্র রায়ের বাড়ি এবং মন্দির আক্রমণ করে ধ্বংস করে তাদের চাহিদা অনুযায়ী এক লাখ টাকা না দেবার জন্য।

 ০৪/০৫/২০২০: রাত ৩ টা নাগাদ জনা ৪০এর একটি সন্ত্রাসী বাহিনী অশ্ত্র সহকারে চট্রগ্রাম এর লোহাগড়ের শান্তিবিহারে হামলা করে মন্দির ও বুদ্ধমূর্তি  ধূলিসাৎ করে।

 এদিন‌ই ডা কাজল কুমার ভৌমিকের ওপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়, যখন তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তিনি এখন শীরপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।কুমিল্লা জেলার ঘটনা।

অপরদিকে একইদিনে স্বপন কুমার সরকার নামের এক মাঝবয়সি ব্যাক্তির মৃতদেহ (৫৫) সোমেশ্বরী নদীতে ভাসতে দেখা যায়। পরে পুলিশ ও দমকলকর্মীরা তার দেহ উদ্ধার করে আত্মীয়দের হাতে তুলে দেয়।

 ঐ দিনই হাবিবগঞ্জ বানিয়াচাঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের সঞ্জয় সরকারকে পুলিশ ধর্ম অবমাননার মিথ্যে অভিযোগে  গ্রেফতার করে।

 ৪ তারিখেই কামালগঞ্জ পুলিশ  আরো একটি হতভাগ্য হিন্দুর মৃতদেহ নদী থেকে উদ্ধার করে। দুলান রাজভর নামে ঐ ব্যাক্তির একটি দুবছরের সন্তান ও স্ত্রী আছে।

 ০৫/০৫/২০২০ : নিয়তির করুণ পরিহাস যে আজ পাঁচ তারিখে সংখ্যালঘু নির্যাতনের পাঁচটি ঘটনা সামনে আসে।

ঘটনা ১: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সকাল ৯ টায় , মহীউদ্দীন , ইউসুফ,ফারহাদ,সাইফুল সমেত ১৫/২০ জনের স্থানীয় সন্ত্রাসীদের একটি দল চিত্তরঞ্জন নামে এক ব্যাক্তির বসতবাড়ি দখলের জন্য হামলা চালায়। এ ঘটনায় ঐ ব্যাক্তিসমেত তার দুই কন্যাও গুরুতরভাবে আহত হয়। পরে তাঁদের সীতাকুণ্ড সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনা ২ : রবি দাস নামে এক হতভাগ্য হিন্দুর জীবনে এদিন ছিলো কালো দিন। প্রথমে রবি দাস ও তার ছেলেকে বেদম প্রহার করা হয়। পরে রাতে একদল সন্ত্রাসী আবার তাদের বসতবাড়ি আক্রমন করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

তার পরিবারের মহিলা সদস্যদেরকেও নির্দয়ভাবে অত্যাচার করা হয়।

 ঘটনা ৩: এদিন নেত্রকোণা জেলার দূর্গাপুর উপজেলায় বাকলঝোরায় কুমুদগঞ্জ বাজার কালী মন্দিরের বিগ্রহ ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এ ঘটনাটি ঘটায় স্থানীয় দুষ্কৃতি রা।

ঘটনা ৪: দুপুর ২.৩০ নাগাদ অজ্ঞাত পরিচয় সন্ত্রাসী রা হঠাৎ করে কার্তিক নামের এক হিন্দু ব্যাক্তির ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। এমতাবস্থায় তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা চিৎকার শুরু করলে দুষ্কৃতি রা পালিয়ে যায়।

ঘটনা ৫: এদিন রাকেশ চক্রবর্তী নামে এক সদ্যতরুন  কে সামাজিক মাধ্যমে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দিয়ে পোস্ট করার মিথ্যা অজুহাতে পুলিশ আটক করে।

০৭/০৫/২০২০ : নরাইল জেলার কালিয়া উপজেলার ভুমিদস্যু মিন্টু মিঞা ও তার দলবল দশটি হিন্দু পরিবারের ওপর চড়াও হয়, তাদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হয়, গাছ কেটে নেয়া হয়, উপরন্তু তাদের দেশ ছেড়ে চলে যাবার জন্য ধমকানো হয়।

০৮/০৫/২০২০ : সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি তে এদিন স্থানীয় গুন্ডারা জীধূরী সাহাপাড়া মন্দিরের বিগ্রহ ভেঙ্গে দেয়। সিরাজগঞ্জ জেলার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতৃত্বরা ঐ মন্দির পরিদর্শন করেন এবং প্রশাসনের কাছে অতিস্বত্তর দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেবার দাবী জানান

 ০৮/০৫/২০২০ : সন্ত্রাসীদের বর্বরতায় প্রাণ হারান সুনীল চন্দ্র নামে এক দৈনিক মজুর। তার সারাদেহে ক্ষতচিহ্ন ছিল।

 ০৯/০৫/২০২০ : ব্রাহ্মণবেড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার নাথপাড়া গ্রামের দস্যু রুবেল মিঞা ও তার দলবল প্রায় প্রতিদিনই ঐ গ্রামের রণজিৎ দেবনাথের বাড়ির সামনে গিয়ে তার বাড়ির মেয়েদের উদ্দেশ্য করে কটুক্তি করতো‌ । এদিন যখন তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তখন পরিবারের সদস্যরা এই দস্যুদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। ফলতঃ পুরো পরিবারের ওপর অত্যাচারের বিভীষিকা নেমে আসে। পরিবারের স্ত্রী পুরুষ প্রতিটি সদস্যকে গুরুতরভাবে জখম করে সোনা, রূপা এবং নগদ দুই লক্ষ টাকা লুট করে।

 এদিনেই মোতিন নামে এক ড্রাগ পাচারকারী জমি দখলের উদ্দেশ্যে সুধীর কুমারের বসতবাড়িতে হামলা চালায়।

অন্যদিকে নেত্রকোণার কালমাকান্ড উপজেলার নাগদারা গ্রামে এদিন ১০০বছরের পুরোনো কালী মন্দির ভেঙ্গে দেওয়া হয়। স্থানীয় মৌলবাদীদের এই পদক্ষেপ যে আসলে স্থানীয় হিন্দু সমাজের ওপর সম্ভাব্য নৃশংসতার প্রথম ধাপ, এই আশঙ্কায় তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ‌।

 এদিন‌ই ইসলামিক বর্বরতার আরেক নিদর্শন সামনে আসে বান্দারবন জেলার কালাঘাটা এলাকায়। একটি হতদরিদ্র হিন্দু ঘরের ৬ বছরের শিশুকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাঠে নিয়ে ধর্ষণ করে আল আমিন (১৮) নামের এক যুবক। স্থানীয় মানুষেরা অচৈতন্য ও রক্তাক্ত অবস্থায় ঐ শিশুটিকে দেখতে পেয়ে তার বাড়ির লোকেদের খবর দেয়। স্থানীয় মাতব্বরেরা চটজলদি এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করতে থাকে যেহেতু আল আমিন নামের ঐ দুষ্কৃতি একজন সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষ।

১০/০৫/২০২০ : ফেসবুকের একটি পোস্টের ছুতো দিয়ে হিন্দু সমাজের ওপর চড়াও হয়ে বসতবাড়ি, মন্দির ভেঙ্গে ফেলা হয় সুনামগঞ্জ জেলার ছটাক পৌরসভার তাতিকোণা  গ্রামে। অন্ততঃ ১০ জন হিন্দু গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাসিরনগরে মিহির দেব নামে এক হিন্দু স্বর্ণকারের দোকানে হামলা করে মূল্যবান সামগ্রী লুন্ঠন করে নাসিরনগর উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার অফিস সদস্যেরা।

১১/০৫/২০২০ : লালমনিরহাট জেলার ছাপরহাট এমেনদারহাটের বিখ্যাত শ্রী শ্রী মা বীদ্ভেশ্বরী মন্দিরের বিগ্রহ ভেঙ্গে দেওয়া হয় স্থানীয় গুন্ডা দ্বারা

১২/০৫/২০২০ : এদিন দুপুর 1 টা নাগাদ নীলফামারী সদর উপজেলার দক্ষিণ হাড়োয়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরের তালা ভাঙার চেষ্টা করে একদল স্থানীয় দুষ্কৃতী। স্থানীয় হিন্দু বাসিন্দারা তাদের ধাওয়া করে তাদের একজনকে ধরে ফেলে এবং সদর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

 ১২/০৫/২০২০ : বাঞ্ছারামপুর ইউনিয়নের প্রাক্তন সদস্য মোহাম্মদ ওমর ফারুক হিন্দুধর্মের অসম্মান করার উদ্দেশ্যে বলপূর্বক টগর দাস নামে এক হিন্দু ব্যক্তির মৃতদেহ কে জোরকরে শ্মশান থেকে একটি পরিত্যক্ত জায়গায় দাহ করতে বাধ্য করেন।

১২/০৫/২০২০ : বাঞ্ছারামপুর ইউনিয়নের প্রাক্তন সদস্য মোহাম্মদ ওমর ফারুক হিন্দুধর্মের অসম্মান করার উদ্দেশ্যে বলপূর্বক টগর দাস নামে এক হিন্দু ব্যক্তির মৃতদেহ কে জোরকরে শ্মশান থেকে একটি পরিত্যক্ত জায়গায় দাহ করতে বাধ্য করেন।

 ১৩/০৫/২০২০ : স্থানীয় দুর্বৃত্তরা রাঙ্গামাটি জেলার শ্রী শ্রী মগদেশ্বরী মন্দিরের পবিত্র বিগ্রহ ভেঙে ফেলে এবং মন্দিরের দান বাক্স থেকে টাকা চুরি করে নেয়।

 এদিনই কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে রুসাফী রুপসা গ্রামের স্থানীয় দুষ্কৃতীরা হিন্দু সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে ১০ জন হিন্দু পুরুষ এবং মহিলাদের মারাত্মকভাবে জখম করে এবং তাদের বাড়িঘরের  উপরে আক্রমণ করে বাড়িঘর ধ্বংস করে ।

আরেকটি ঘটনা মৌলভীবাজারের কামালগঞ্জ উপজেলার শ্রীনাথপুর গ্রামের। স্থানীয় দুষ্কৃতী মধু মিঞা লাগাতার কুপ্রস্তাব ও কটুক্তি সহ্য করতে না পেরে অবশেষে ১৬ বছরের হিন্দু বালিকা  সঞ্চিতা অবশেষে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।

অপরদিকে দিনাজপুর জেলার সদর থানা এলাকায় ক্ষেত্রীয় সমিতির পার্থসারথি মন্দিরে এদিন পেছনের দরজা ভেঙে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা ভেতরে প্রবেশ করে এবং মন্দিরের গয়না এবং মন্ত্রীদের সঙ্গে থাকা ছাত্রাবাসের ছাত্রদের মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে নেয়।

 ১৪/০৫/২০২০ : শরীয়তপুর জেলার সন্তোষপুর এলাকার হিন্দুরা স্থানীয় দস্যুদের ভয়ে ত্রস্ত হয়ে আছে।বিগত এক মাসে ওই এলাকায় প্রায় দশটি হিন্দু বাড়ি  আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এদিন আবারও স্থানীয় দুস্কৃতিকারীরা নরেন মল্লিক নামে এক হিন্দু ব্যক্তির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। যার ফলে শুধু তার বাড়িটিই নয় , বাড়ির দুটো গৃহপালিত গরুও এই আগুনে পুড়ে মারা গেছে।

 ১৫/০৫/২০২০ : স্থানীয় হিন্দুদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও তার গুন্ডাবাহিনী ঐ এলাকার প্রমিলা সিংহ, প্রতিমা সিংহ ,চন্দ্রমোহন সিংহ, মাইকেল দেব বর্মন, প্রভাস সিংহ, রামচন্দ্র দাস, চন্দন, উৎপল সিংহ, বলরাম, ঝর্ণা,লাজমি ,মৃদুল ,কবিতা, তিলক ,চন্দ্রমোহন মিরা সিংহ এদেরকে ইউনিয়ন অফিসে নিয়ে একটা রুমে বন্ধ করে দেয় এবং মারতে থাকে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে এ ঘটনা দেখতে থাকে। শুধু এটুকুই নয় ভোলা জেলার মনপুরায় ব্লাসফেমি আইনের লঙ্ঘন করা হয়েছে এই গুজব ছড়িয়ে স্থানীয় হিন্দুদের ওপর মুসলিম সম্প্রদায় ঝাঁপিয়ে পড়ে।

 ১৬/০৫/২০২০ : পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া এলাকার পাখিমারা গ্রামের দস্যু সুলতান ও তার বাহিনী একটি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের ওপর আক্রমণ করে ।এই ঘটনায় ওই পরিবারের তিনজন মহিলা গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। ওই সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এই আক্রমণ বলে স্থানীয়দের অভিমত।

 ১৭/০৫/২০২০ : এদিন স্থানীয় দুস্কৃতিকারীরা বাউল রণেশ চক্রবর্তী ঠাকুর এর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও পুলিশ এখন অব্দি এই ঘটনায় কাউকেই দোষী সাব্যস্ত করতে পারেনি। সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার উজানধাল গ্রামের ঘটনা।

 ১৮/০৫/২০২০ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত তিলাপাড়া থেকে এদিন পুলিশ মোহনলাল দাস নামে এক হিন্দু চাষির দেহ উদ্ধার করে। রসুলপুরে একটি পাটের খেতে তার দেহ পাওয়া যায়।

 ১৯/০৫/২০২০ : বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জের আম্ব্রিয়া গ্রামের দুষ্কৃতী এবং লোকাল চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী ও তার গুন্ডাবাহিনী ওই এলাকার হিন্দু পুরোহিত শ্রী সমীর হালদার এবং তার স্ত্রীকে এদিন প্রচণ্ড মারধোর করে। ওই পুরোহিতের বসতবাড়ি এবং জমি থেকে জোর করে উৎখাত করার উদ্দেশ্যেই এই  আক্রমন বলে স্থানীয় লোকেদের অভিমত।

২৫/০৫/২০২০ : তাপস দাস নামে পটুয়াখালী জেলার  হিন্দু ছাত্রলীগের একজন কর্মী এদিন ছুরিকাঘাতে নিহত হন।রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে এই  খুন ঠিক সেই সময়ই হয় যখন ওই হতভাগ্য হিন্দু কর্মী বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে নিজের চিকিৎসা করিয়ে ফিরছিলেন।

২৮/০৫/২০২০ : স্থানীয় ভূমিদস্যু মোহাম্মদ আবদুস সালাম সোমা বিষ্ণু নামের এক হিন্দু মেয়েকে তার পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করলে, ঐ সাহসিনী রুখে দাঁড়ালে ঐ ভূমিদস্যু লোহার রড দিয়ে সোমার মাথায় আঘাত করে। গুরুতর জখম অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে খুলনা হাসপাতালে ভর্তি করেছেন, অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।

এদিন‌ই বোগরা জেলার ঘোষপাড়া শহরে বিপুল মহন্ত নামে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর বাড়িতে আক্রমণ করে তার বসতবাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং স্বর্ণালঙ্কার লুন্ঠন করা হয়। পরিবারের সদস্যদেরো নিগৃহীত করা হয়েছে।

 ২৯/০৫/২০২০ : মোহাম্মদ আবদুল জলিল, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ মামুন ও নাকি খাতুন বিগত কয়েকমাস যাবৎ শ্রীধাম বিশ্বাস

ও সরল বিশ্বাস কে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে আসছে দেশত্যাগ  করার জন্য। এদিন তাদের নামে মিথ্যা কেস নথিভুক্ত করায় এ ভূমিদস্যুরা। সাতক্ষীরা জেলার ফতেপুর গ্রামের ঘটনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.