দীপাবলির পর থেকে ক্রমেই বাড়ছে দিল্লির দূষণের মাত্রা। এখন দিল্লির দূষণের মাত্রা ‘সিভিয়ার প্লাস’ বা ’ইমার্জেন্সি’ শ্রেণিতে পড়ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রাজধানী শহরে জনস্বাস্থ্যের নিরিখে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। মঙ্গলবার পর্যন্ত দিল্লির সব স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার। সমীক্ষা বলছে, গত তিন বছরের তুলনায় এবছর দিল্লিতে দূষণের মাত্রা কম। তবে তাতেও যে পরিমাণ বায়ুদূষণ হয়েছে সেটা স্বাভাবিক জনজীবনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
গত কয়েক বছর ধরেই দীপাবলির দূষণ নিয়ে সতর্কবার্তা দিচ্ছে বিভিন্ন রাজ্য। তবে লাভ হয়নি বিশেষ। এত সতর্কতার পরেও শব্দবাজির বিকট আওয়াজে কান পাতা দায়। সঙ্গে উপরি পাওনা দমবন্ধ করে দেওয়া ধোঁয়া। কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমন্ত্রকে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ডাহা ফেল করেছে দিল্লি। এই ইনডেক্স অনুযায়ী, ০ থেকে ৫ মাত্রার অর্থ ভালো, ৫১-১০০ সন্তোষজনক, ১০১-২০০ মাঝারি, ২০১-৩০০ খারাপ, ৩০১-৪০০ খুব খারাপ এবং ৪০১-৫০০ অত্যন্ত খারাপ। চলতি বছর দিল্লির বায়ুদূষণ অত্যন্ত খারাপ বা ‘সিভিয়র’ ক্যাটেগরিতে থাকবে বলেই পূর্বাভাস দিয়েছিল এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং সার্ভিস।
তথ্য বলছে, দীপাবলের পর থেকে দিল্লির মোট ৩৭ জায়গার মধ্যে ৩৬টি জায়গাতেই বায়ু দূষণ ‘সিভিয়ার প্লাস’ বা ‘ইমার্জেন্সি’ ক্যাটেগরিতে রয়েছে। বাজির দাপটে ধোঁয়াশায় ঢেকেছে দিল্লির রাজপথ। আর এই দূষণের সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব বাচ্চাদের মধ্যেই পড়ে। তাই আপাতত স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই দিল্লিকে গ্যাস চেম্বার বলে তকমা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রাজধানীর এই অবস্থার জন্য প্রতিবেশী পঞ্জাব ও হরিয়ানাকে দুষেছেন কেজরিওয়াল। তিনি মনে করেন প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বছরের এই সময় নাড়া (stubble burning) পোড়ান কৃষকরা। তার জন্যই ধোঁয়ায় ভরে যায় দিল্লি। দূষণের মাত্রা এতটাই বেড়ে গেছে যে প্রাতঃভ্রমণকারীদের পর্যন্ত সকালে মাস্ক পরে হাঁটতে বেরতে হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ মাস্ক বিলি করার নির্দেশও দিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার। পাশাপাশি আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে কোনও রকম নির্মাণকাজ করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে এনভায়রনমেন্ট পলিউশন (প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল) অথরিটি।
শীতকালে দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় বাজি ফাটানো যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।