মোদী সরকারের দাবি, তাদের আমলে দু’বার পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে সেনা। অন্যদিকে, কংগ্রেসের দাবি, তাদের আমলে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল ছ’বার। লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে এসে, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, ইউপিএ আমলে যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল, তার প্রমাণ নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময় যাঁরা সেনাবাহিনীর বিভিন্ন শাখার প্রধান ছিলেন, তাঁরা বলেছেন, কংগ্রেসের আমলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল বলে জানা নেই। মোদীর প্রশ্ন, তাহলে কেমন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল? কে অর্ডার দিয়েছিল? সেই অর্ডারের নথি কোথায়? ইউপিএ-র উচিত এই প্রশ্নগুলির জবাব দেওয়া। আমি শুধু একটা কথাই বলব, কংগ্রেসের আমলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সালে উরিতে জঙ্গি হানার পরে মোদীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স সেনাকে নির্দেশ দেয়, পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে হামলা চালাতে হবে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পর ভারতের বায়ুসেনা ফের পাকিস্তানের বালাকোটে বোমাবর্ষণ করে। গত সপ্তাহে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, তাঁর আমলেও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা বাইরে বলে বেড়াননি।
চলতি লোকসভা নির্বাচনে দেশের সুরক্ষাকে প্রধান ইস্যু করে তুলেছে বিজেপি। মোদী বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের ব্যাপারে ভারত সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। পাকিস্তান একের পর এক হামলা চালিয়ে গিয়েছে, কিন্তু সেজন্য তাদের কোনও শাস্তি হয়নি। ফলে সন্ত্রাসবাদী ও তাদের মদতদাতারা ভেবেছিল, তারা যা খুশি তাই করে রেহাই পেতে পারে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রথমে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিলাম। পরে আকাশপথে আক্রমণ চালিয়েছি। আমরা তাদের বার্তা পাঠিয়েছি, সন্ত্রাসে মদত দিলে তার মূল্য দিতে হবে।
বিরোধীরা মন্তব্য করেছেন, ওই ধরনের আক্রমণ চালানোর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। মোদী তেমন সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করেন। তিনি সরাসরি পাকিস্তানের নাম না করে বলেন, তাদের বোঝা উচিত, সন্ত্রাসে মদত দিলে নিজেদের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে।
কিছুদিন আগে জইশ ই মহম্মদের নেতা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। মোদী বলেন, অনেকে ভুল করে বলে, এক্ষেত্রে চিনই প্রধান সমস্যা হয়ে উঠেছিল। আসলে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদই প্রধান সমস্যা।
মোদীর দাবি, তিনি ফের ক্ষমতায় আসছেন। তাঁর সরকারের কাজের ভিত্তিতে মানুষ ভোট দেবেন।