স্বার্থ, অহংকার, নিজ কীর্তি প্রকাশ করার জন্য নয়। নিজের আত্মীয় বৃত্তি ও সেবা মনোভাব নিয়ে আর্তের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসতে হবে। সেবার মধ্যে কোনও অহংকার থাকবে না মনে রাখতে হবে দেশের ১৩০ কোটি জনগণই ভারত মাতার সন্তান। সকলেই আমাদের বন্ধুজন। দেশে করোনা মহামারীর প্রকোপের সময় সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে মানুষের জন্য মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। এবং সমস্ত সরকারি নির্দেশ পালন করেই একাজ করতে হবে বলে রবিবার অনলাইনে দেওয়া নিজের ভাষণে একথা বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকসঙ্ঘ (আরএসএস)-এর সরসঙ্ঘচালক ড. মোহন ভাগবত।
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারনে জেরাবার সমগ্র বিশ্ব । করোনায় আক্রান্ত ভারতবর্ষও । করোনা রোধে দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলছে লকডাউন । যার জেরে বিপাকে পড়েছে কোটি কোটি ভারতবাসী । লকডাউনে বিপাকে পড়া দেশবাসীর সহায়তায় বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছে আরএসএস ও আরএসএস-এর একাধিক সহ সংগঠন । এই অবস্থায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকসঙ্ঘের কর্তব্য কি হওয়া উচিত তা নিয়েই অনলাইন এক বৌদ্ধিক বর্গের আয়জন করে আরএসএস । রবিবার বিকেলে ওই অনলাইন বৌদ্ধিক বর্গে এই অবস্থায় স্ব্যংসেবকদের ভূমিকা নিয়ে দিক নির্দেশ করেন সরসংঘচলক ড. মোহন ভাগবত । এদিন তিনি জানিয়েছেন, করোনার জেরে সঙ্ঘের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ থাকলেও সেবা কর্ম চলছে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে, যেসব জায়গায় লকডাউন রয়েছে সেখানে অনুমতি নিয়েই কাজ করে যেতে হবে। মহামারীকে ভয় পেলে চলবে না। কারণ ভয় পেলে সংকট আরও বেশি বেড়ে যায়। ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত
নিতে হবে। নিজেকে সুস্থ রেখে সেবা কার্য এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ত্রাণ থেকে কেউ যাতে
বাদ না যায়, তা দেখতে হবে। কোনও মতেই হাল ছাড়লে চলবে না। সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে মানুষের জন্য মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। সাহায্য নয় সেবা এই মানসিকতা রাখতে হবে।
সেই সঙ্গে এদিন তিনি সাবধান করেন, উপকার করছি এই মানসিকতা রাখলে চলবে না। সেবা ও স্নেহের মানসিকতা রাখতে হবে। ভারত নিজের কিছুটা ক্ষতি করে বিদেশি রাষ্ট্র গুলোকে ওষুধ দিয়ে সাহায্য করেছে। এটাই ভারতের প্রাচীন পরম্পরা। পরপোকারী হতে হবে। কিন্তু করোনা থেকে সাবধান হতে হবে। আয়ুষ মন্ত্রণালয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যা বলেছে তা মেনে চলতে হবে। নিজেকে ভাল রাখতে হবে এবং একই সঙ্গে সমাজ তথা গোটা বিশ্বকে ভাল রাখতে হবে। যত দিন এই সঙ্কট থাকবে ততদিন সেবাকার্য চালিয়ে যেতে হবে।মাঝ রাস্তায় এসে হাল ছাড়লে চলবে না।
করোনা মকাবিলা নিয়ে এদিন তিনি বলেন, ভারত প্রথম থেকেই
তৎপর ছিল। তাই বড় বিপদ এরানো গিয়েছে। অসাবধান হলে চলবে না। রাগ কমাতে হবে । কারণ এর ফায়দা নিয়ে অনেকে ভ্রান্ত অপপ্রচার চালাবে ও চালাচ্ছে যেমন টুকরে টুকরো গ্যাং। যারা বলেছিল ভারতের হাজার টুকরো হবে, তাদের থেকে সাবধান হতে হবে। মহারাষ্ট্রে যে দুই সন্ন্যাসীকে হত্যা করা হল তারা দেশ হিতৈষী ছিলেন। মানব উপকারী ছিলেন।
মোহন ভাগবত আরো জানিয়েছেন, লক ডাউন উঠে গেলেও সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কারখানায় কাজ করতে হবে স্কুলগুলিতে কি করে ই লার্নিং করা যায় সেই দিকে পদক্ষেপ নিতে হবে। রাষ্ট্র পুনর্গঠনে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মানুষকে জাগ্রত করতে হলে বুদ্ধিজীবীদের সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে। সঙ্কট স্বাবলম্বী হতে শেখায়।পরিবেশ বাঁচিয়ে কি করে অর্থ নৈতিক পথ তৈরি করা যায় সেই বড় পরিকল্পনা নিতে হবে।