ফণীর তাণ্ডব শুরু হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পুরী সহ ওড়িশার একাধিক জেলা। এ রাজ্যেও সে কিছুটা দুর্বল হয়ে আছড়ে পড়তে চলেছে। যার জেরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে গোটা পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে কৌতূহল সকলেরই—তা হল ঘূর্ণী ঝড়ের নাম ‘ফণী’ কেন?
আসলে বর্তমানে দোর্দান্ড প্রতাপ এই ঝড়টির নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। ‘ফণী’ মানে ফণা বা সাপের ছোবল। এক্ষেত্রে বুঝতে হবে ঝড়ের ছোবল। জেনে রাখা ভালো যে টাইফুন, হ্যারিকেন বা সাইক্লোনের মতো ঝড়কে নাম দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু প্রায় ১০০ বছর আগে থেকে। ইতিহাস বলছে, ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দারা বহু যুগ আগে থেকেই ঝড়ের নাম দিতেন। পরে মার্কিন আবহাওয়াবিদেরা এই প্রথাটি গ্রহণ করেন। এবং ধীরে ধীরে তা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ৷ একটা সময় ইংরেজি বর্ণমালার ক্রমানুসারে প্রত্যেকটি ঘূর্ণিঝড়ের একটি করে নাম দেওয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা মনে রাখায় অসুবিধার কারণে ঝড়ের অন্যরকম নামকরণের দিকে ঝোঁকে বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা ৷ এবং ঠিক হয়, ভারত মহাসাগর কেন্দ্রিক ঝড়গুলোর নামকরণ করবে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অন্তর্গত আঞ্চলিক কমিটির আট দেশ। এই আটটি দেশ হল বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান ৷
এর কিছুদিন পর ঠিক হয়, বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর উপকূলের আটটি দেশের প্রস্তাব অনুসারে ৬৪ টি নামের একটি তালিকা আগে থেকেই ঠিক করে রাখা হবে ৷ তা কার্যকরও হয়। যেমন, ‘ফণী’ নামটি বাদ দিলে আগে থেকেই আরও ৭ টি ঝড়ের নাম ঠিক করে রাখা আছে। পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে যা ব্যবহার হবে। ফণীর পর যে ঝড় আসবে, সেই ঝড়ের নামও ঠিক করা রয়েছে। ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী তার নাম হবে ‘ভায়ু’। অতএব, বোঝাই যাচ্ছে ঝড়ের নামকরণের বিষয়টিও আবহাওয়াবিদদের জন্য হেলাফেলার বস্তু নয়।