যুদ্ধ চলাকালীন বন্দুকের গুলি শেষ হয়ে গেছিল সৈনিক সত্যপাল সিংয়ের! ঘুষি মেরে ৪ পাকিস্তানি সেনাকে করেছিলেন বধ।

১৯৯৯ সালের কার্গিল বিজয় দিবসের গাঁথা আজও প্রত্যেক ভারতীয়র বুকের ছাতি চওড়া করে। ৮ ই মে থেকে ২৬ শে জুলাই পর্যন্ত চলা কার্গিল যুদ্ধ পুরো বিশ্বের সামনে ভারতীয় সেনার পরাক্রমতাকে প্রদর্শিত করেছিল। কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের সেনা বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়েছিল তা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনার সামনে টিকতে পারেনি। প্রচন্ড সমস্যার মধ্যেও ভারতের বীর জওয়ানরা দেশের রক্ষা করেছিলেন এবং পাকিস্তানকে শিক্ষা দিয়েছিলেন।
কার্গিল যুদ্ধ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে একজন সৈনিকের চর্চা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক হারে চলছে। সেই সৈনিক হলেন পাঞ্জাবের সত্যপাল সিং। কার্গিল যুদ্ধের সময় সত্যপাল সিং এর এলএমজিতে গুলি শেষ হয়ে গেছিল। যারপর উনি নিজের বন্দুককে আলাদা রেখে পাকিস্তানি সৈনিকদের সাথে হাতাহাতি করতে ছাপিয়ে পড়েন।

কুস্তিতে পারদর্শী সত্যপাল সিং লাথ ও ঘুসি মেরে ৪ পাক সেনাকে মেরে ফেলেছিলেন।
সৈনিক সত্যপাল সিং তার এই পরাক্রমের জন্য বীরচক্র পেয়েছিলেন। এক সংবাদ মাধ্যমের কাছে দেওয়া ইন্টারভিউতে উনি বলেন, ১৯ গ্রেনেডিয়ার্স এর এক সৈন্যদল টাইগার হিলে ভারতের পতাকা উত্তোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেই সময় ৮ শিখ রেজিমেন্টের এক দলকে সেখানে সাহায্যের জন্য যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সৈন্যদল টাইগার হিলে পৌঁছলে ৭ ই জুলাই পাকিস্তানের তরফে আক্রমন করা হয়। ভারতীয় সৈনিকদের পেছনে সরানোর জন্য পাকিস্তান আক্রমন করে। ভারতের সেনাও পাল্টা আক্রমণ শুরু করে দেয়।

দুই পক্ষের মধ্যে ভীষণ গুলিবর্ষণে আমাদের ৮ জওয়ান শহীদ হয়। ভারতের জন্য স্থিতি কঠিন ছিল তা সত্ত্বেও সৈন্যদল শেষ নিঃশ্বাস অবধি লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেয়। স্থিতি এমন জায়গায় চলে আসে যে পাকিস্তানের এক সৈন্য দল ভারতের সৈন্যদল মুখোমুখি হয়ে যায়। সত্যপাল সিং এর বন্ধুকে মাত্র ৪ টি গুলি ছিল। পাকিস্তানের সৈন্যদের সামনাসামনি চলে আসায় এবার লড়াই এপার-ওপারের হয়ে উঠেছিল। পাকিস্তান এক লম্বা চওড়া সৈনিককে সত্যপাল সিং কব্জিতে ধরে আছড়ে দেন। পাকিস্তান আরো তিন সৈনিক তখন সত্যপালের উপর উপর আক্রমণ করে দেয়। কিন্তু কুস্তিতে পারদর্শী সত্যপাল সিং ৪ জনকেই তুলে আছড়ে দেন এবং ঘুষি মেরে নিহত করে দেন। কার্গিল যুদ্ধের পর এই ঘটনা খুব চর্চিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি আর কে নারায়ণ, সত্যপাল সিংকে বীরচক্র দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.