দিল্লির জামা মসজিদের শাহি ইমাম সঈদ আহমেদ বুখারি নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন বিক্ষোভে রাশ টানার আবেদন জানালেন

দিল্লির জামা মসজিদের শাহি ইমাম সঈদ আহমেদ বুখারি নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন বিক্ষোভে রাশ টানার আবেদন জানালেন৷ তাঁর বক্তব্য, আবেগকে সংযত করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিবাদ করা প্রয়োজন।

বুখারি জানান, যে এনআরসি মুসলিম সম্প্রদায়ে ভীতির সৃষ্টি করেছে, তা তো এখনও আইনে পরিণত হয়নি৷ তাঁর কথায়, ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম রিফিউজিরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবে না৷ ভারতে বসবাসকারী মুসলিমদের এই আইনের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই৷ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) মধ্যে তফাত রয়েছে৷ সিএএ এখন আইনে পরিণত হয়েছে, এনআরসি শুধুমাত্র ঘোষণা করা হয়েছে৷ এখনও আইন হয়নি৷’

পূর্ব দিল্লির শীলামপুর ও ব্রজপুরীতে বুধবার হিংসাত্মক আন্দোলন হয়েছে৷ পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাথর ছুঁড়েছে বিক্ষোভকারীরা৷ ভাঙা হয়েছে একাধিক গাড়ি৷ বিক্ষোভ ঠেকাতে লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস ফাটিয়েছে পুলিশ৷ গত রবিবার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে পুলিশের হস্তক্ষেপে উত্তাল হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস৷

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকরের ক্ষেত্রে আপাতত কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট৷ নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় মোট ৫৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে৷ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, সব কটি আবেদনের শুনানি হবে ২২ জানুয়ারি৷

এ দিন শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে একটি নোটিস পাঠিয়েছে৷ আইন নিয়ে কেন্দ্রের কাছে জবাব তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট৷ অন্যদিকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা আজও অব্যাহত দেশজুড়ে৷ এই আইনের বিরোধিতায় শীর্ষ আদালতে মামলা করেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ, ত্রিপুরার প্রাক্তন মহারাজা কিশোর দেববর্মন৷ নাগরিকত্ব আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা৷ প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে বেঞ্চ এই আবেদনের শুনানির দিন ১৮ ডিসেম্বর ধার্য করেছিল৷ এ দিন আদালত জানিয়ে দেয়, মোট ৫৯টি আবেদনই ২২ জানুয়ারি শোনা হবে৷

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, সেই সব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, যাঁরা ধর্মীয় নিপীড়নের জেরে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে ভারতে এসে আশ্রয় নেন৷ ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ১২ মাস টানা ভারতে থাকতে হত৷ একই সঙ্গে গত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর ভারতবাস জরুরি ছিল। সংশোধনী বিলে দ্বিতীয় নিয়মে পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্থান থেকে আসা নির্দিষ্ট ছয়টি ধর্মাবলম্বীদের জন্য ১১ বছর সময়কালটিকে নামিয়ে আনা হচ্ছে ৬ বছরে। বেআইনি অভিবাসীরা ভারতের নাগরিক হতে পারে না। এই আইনের আওতায়, যদি পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়া কেউ দেশে প্রবেশ করে থাকেন, বৈধ নথি নিয়ে প্রবেশ করার পর নির্দিষ্ট সময়কালের বেশি এ দেশে বাস করে থাকেন, তা হলে তিনি বিদেশি অবৈধ অভিবাসী বলে গণ্য হবেন।

https://www.ndtv.com/india-news/delhis-jama-masjid-shahi-imam-says-citizenship-law-has-nothing-to-do-with-indias-muslims-2150566

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.