যারা মুখে বাঙালির অধিকার রক্ষার কথা বলছে, তারা সংসদে CAB এর বিরোধিতা করছে!

অসমে এনআরসির অন্যতম সমর্থক রাজনৈতিক দলটি হল সিপিএম। NRC চেয়ে অসমের রাস্তায় একাধিকবার নামতে দেখা গেছে বামেদের। সূত্রের খবর মনমোহন সরকারের সময় এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তদারকি করেছিলেন খোদ প্রকাশ কারাত।

সম্প্রতি বঙ্গ-সিপিএমের রাজ্য প্রধান সূর্যকান্ত মিশ্রও প্রকারান্তে অসম এনআরসিকে সমর্থনই করেছেন৷ কিন্তু এই সিপিএমই আবার পশ্চিমবঙ্গে এনআরসির বিরোধী। সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও একই সূরে কথা বলছে। অথচ বিরোধী নেত্রী থাকার সময় সংসদে দাঁড়িয়ে অনুপ্রবেশ আটকাতে চেয়ে কাগজপত্র ছুঁড়ে ফেলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

১৯৫১ সালে অসমে জনগণনা হয় এবং প্রায় তখন থেকেই দাবী ওঠে (অবশ্যই অসমীয়রা দাবী তুলেছিল) NRC নিয়ে আসতে হবে। এরপর ১৯৮৫ সালে অসম অ্যাকর্ডে (রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৯৫১ থেকে ১৯৭১ এর ২৪ শে মার্চ রাত্রি ১২টার আগে যারা অসমে এসেছেন তারা অসমের নাগরিক খুবই সাধারণভাবে। এখানে একটা বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন ১৯৫১ থেকে ১৯৭১ এর ২৪ মার্চ রাত্রি ১২ টার মধ্যে যারা অসম এসেছেন তাদের ওই ২০ বছরের মধ্যে অসম থাকার লিগ্যাল নথিপত্র বানিয়ে নিতে হবে।

অসমে হওয়া এনআরসি পদ্ধতির বেশিরভাগটিই কংগ্রেস সরকারের (রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী) প্রণয়ন করা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের একশ শতাংশের সুরক্ষা দেওয়ার কিছু অসুবিধে রয়েছে। তাই নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই ক্যাব (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ২০১৬) নিয়ে আসার কথা বলে। এই বিলে বাংলাদেশ, আফগানিস্থান,মায়ানমার, পাকিস্তান থেকে অত্যাচারিত হয়ে ভারতে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলে মোদী সরকার।

সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের আগে লোকসভায় এই বিল পাশ হলেও রাজ্যসভা বিরোধীরা এই বিল পাশ হতে দেয়নি। কারণ হিসেবে বিজেপি-বিরোধী দলগুলির বক্তব্য ছিল, ‘এই বিলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান থেকে আসা শুধু হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলেছে বিজেপি। এটা মুসলিম বিদ্বেষী বিল, তাই তারা এই সমর্থন করছেন না। বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে তৃণমূল, সিপিএম বরাবর এই ক্যাবের বিরোধিতা করেছে। অথচ বাংলায় এই দলগুলি মুখে বাঙালির অধিকার রক্ষার কথা বলছে! দেশে যে এনআরসির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা সিপিএম ও তৃণমূল নেতারাই প্রমান করেছে অতীতে। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে তাঁরা এখন পশ্চিমবঙ্গে এনআরসির বিরোধিতা করছেন! বাংলাতো আর দেশের বাইরে নয়। বঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলি যদি সত্যিই বাঙালির কথা চিন্তা করতেন তাহলে, এনআরসির বিরোধিতা না করে শক্তিশালী ক্যাবের জন্য আন্দোলন করতেন।

শেখর ভারতীয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.