‘মোদি অমর’: চীনা নেটিজেনরা মনে করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আলাদা, আশ্চর্যজনক, রিপোর্ট বলছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন দ্য ডিপ্লোম্যাটে
সম্প্রতি একটি খবর প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে চীনা সাধারণ মানুষরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি ডাকনাম দিয়েছেন – “মোদি লাওকসিয়ান! চীনা ভাষায় লাওকসিয়ান মানে কিছু অদ্ভুত ক্ষমতা সহ একজন বয়স্ক অমর বোঝায়।
পত্রিকাটির মতে চীনের নাগরিকরা মনে করে নরেন্দ্র মোদি অন্য বিশ্ব নেতাদের থেকে আলাদা। মোদির সম্পর্কে ভালো – খারাপ দুই মনোভাব মিলিয়েই এক বিশাল কৌতুহল চীনাদের মনে তৈরী হয়েছে। যেটাই প্রতিফলিত হচ্ছে “লাওক্সিয়ান” শব্দটিতে।
নিবন্ধটির লেখক আরও বলেছেন যে চীনা নাগরিকরা কোনো বিদেশী নেতাকে ডাকনাম দিচ্ছে এমন ঘটনা বিরল। স্পষ্টতই তিনি চীনা জনমতের উপর একটি বড়সড় ছাপ ফেলেছেন যা অন্যকেউ পারেনি।
এছাড়াও চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভারত বিশ্বের প্রধান দেশগুলির মধ্যে যেভাবে ভারসাম্য বজায় রাখছে তাও চীনাদের অভিভূত করে দিয়েছে।
লেখকের মতে – “রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশই হোক না কেন, ভারত তাদের সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে পারে, যা কিছু চীনা নাগরিকের কাছে অত্যন্ত প্রশংসনীয় লেগেছে!”
নিবন্ধের উপসংহারে এও বলা হয়েছে যে, সীমান্ত বিরোধ ছাড়া ভারতের প্রতি চীনাদের মনে কোনো বিদ্বেষ নেই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ইন্টারনেটের মাধ্যমেও প্রধানমন্ত্রী মোদি চীনা জনগণের সাথে যোগাযোগ রাখেন। মাইক্রোব্লগিং সাইট সিনা ওয়েইবোতে মোদি তাঁর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও চীনা জনসাধারণের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। অ্যাকাউন্টটি তিনি ২০১৫ সালে খুলেছিলেন। সেখানে তার ২.৪৪ লাখেরও বেশি ফলোয়ার ছিল। তবে সীমান্তে চীনা আগ্রাসনের প্রতিবাদে ৫৯ টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার পরে ২০২০ এর জুলাইরে তিনি ওয়েইবো ছেড়ে দেন।
নিবন্ধটি আরো জানিয়েছে যে চীনের সাধারণ মানুষ পাকিস্তানের থেকে ভারতকে বেশী বিশ্বাস করে আর পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখার বিষয়ে তারা বেশী আগ্রহী। তাদের মতে চীন পাকিস্তানকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে দক্ষিন এশিয়ার দুই প্রতিবেশী অর্থাৎ ভারত ও চীনের মধ্যে দূরত্বকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
তবে একইসাথে নিবন্ধটিতে পশ্চিমা দেশগুলির সাথে ভারতের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা সম্পর্কে চীনা আতঙ্কের কথাও বলা হয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্কের উন্নয়ন তাদের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। । “কেন ভারত পশ্চিমের প্রিয়, অথচ চীন পশ্চিমের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ভারত কীভাবে এটি পরিচালনা করেছে?” – এটিই এখন বেশিরভাগ চীনা জনগণের আলোচনার বিষয়।
সব মিলিয়ে এটাই বলা যায় রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরে অন্য কোনো ভারতীয় সম্ভবত চীনাদের মনে এতটা প্রভাব ফেলতে পারেনি যতটা মোদি পেরেছেন। দেখাই যাক এর ভবিষ্যত কী হয়।
সৌভিক দত্ত