১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই এপ্রিল, দিনটা বৈশাখীর পবিত্র ক্ষণ হলেও, ঐ দিনেই ঘটা জালিয়ানওয়ালাবাগের নারকীয় হত্যাকাণ্ড আজও আমাদের কাছে এক মর্মান্তিক স্মৃতি। এটা ভারতীয় জনমানসকেই শুধু জাগ্রত করেনি, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিতও নাড়িয়ে দিয়েছিল।
ভারতীয়দের বাধা সত্ত্বেও রাউলাট আইন জোর করে পাশ করিয়ে ছিল ব্রিটিশরা। এর পর থেকেই বিলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন চলতে থাকে। ড. সৈফুদ্দিন কিচলু আর ড. সৎপালকে গ্রেপ্তার করে জেনারেল ডায়ার সমস্ত জনসভা, শোভাযাত্রা ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করেন। ১৩ই এপ্রিল এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে জালিয়ানওয়ালাবাগে এক বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়।
বিশ হাজারেরও বেশি মানুষ ঐ সভায় যোগ দেন। জেনারেল ডায়ার সভাস্থলের একমাত্র প্রবেশপথটিকে বন্ধ করে দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালানোর আদেশ দেন। পৈশাচিক ঐ অত্যাচারের মুখে শতাধিক অসহায় মানুষ নিহত ও সহস্রাধিক আহত হন।
এই নৃশংস গণহত্যা সমগ্র দেশে ব্রিটিশের প্রতি ঘৃণা জাগিয়ে তোলে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর নাইট উপাধি পরিত্যাগ করেন। সর্দার ভগৎ সিং এই রক্তরঞ্জিত মাটি হাতের মুঠোয় নিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিজ্ঞা করেন। এর ২১ বছর পরে, ঘটনার প্রত্যক্তদর্শী সর্দার উধম সিং ইংল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে জেনারেল ডায়ারকে হত্যা করেন।
আপামর ভারতবাসীর কাছে আজও জালিয়ানওয়ালাবাগ দেশাত্মবোধের তীর্থক্ষেত্র।
এবছর জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনার শতবর্ষপূর্তি। আত্মত্যাগের এই ঘটনার কথা দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের কর্তব্য। সকলের কাছে এই আমাদের আবেদন।
সৌজন্যে অর্গানাইজার