লোকসভা নির্বাচন আসতেই প্রায় সব রাজনৈতিক দলগুলিও তাদের ঘোষণাপত্রপত্রও প্রকাশ করেছে। একই সময় BJP পার্টিও ঘোষণা পত্র জনসাধারণের সামনে উপস্থাপন করেছে যার মধ্যে প্রায় সব ক্ষেত্রের উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। “সংকল্পিত ভারত সশক্ত ভারত” এর নমুনায় বিজেপি তাদের ঘোষণাপত্রে অনেক এ রকম জনসাধারণের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিও নিয়ে এসেছে যা আগে কখনো কোনো পার্টি নজর দেয়নি।এর মধ্যে এক অনন্য এবং অন্যতম বিষয় হ’ল আমাদের ভারতীয় ভাষাগুলির(বাংলা ভাষা, তামিল ভাষা, হিন্দি ভাষা,তেলেগু ভাষা) পুনরুত্থান করা।
লক্ষ্য সব আঞ্চলিক ভাষাগুলি,এবং সংস্কৃত ভাষা(Sanskrit language) পুনরুজ্জীবিত করা। বিজেপি তাদের ঘোষণাপত্রে বলেছে যে, সকল ভারতীয় ভাষা ও রাজ্যগুলির সঙ্গস্কৃতির বর্তমান অবস্থার জাতীয় স্তরে একটি কার্যবিবরণী গঠন করা হবে। ভারতীয় ভাষা ও আঞ্চলিক ভাষাগুলির মান বজায় রাখার জন্য সকল সম্ভাব্য চেষ্টা করা হবে।ম্যানিফেস্ট তে এটাও বলা হয়েছে যে সংস্কৃত ভাষার উপর বিশেষ মনোযোগ দিলে এটি নিশ্চিত করা হবে যে, স্কুলে স্তরে সংস্কৃত শিক্ষার সম্প্রসারিত করতে হবে।
সংস্কৃত বিশ্বের সবথেকে প্রাচীন ভাষা যা অপরিবর্তনীয়। অর্থাৎ প্রত্যেক ভাষার রূপ ১০০-৫০০ বছরের মধ্যে পরিবর্তন হলেও সংস্কৃত ভাষার কোনো পরিবর্তন হয় না। কারণ এটা দেব ভাষা তথা সবথেকে বৈজ্ঞানসম্মত ভাষা। আধুনিক যুগে বিজ্ঞানিরা ভাষার মাধ্যমে যে কম্পিউটার তৈরি করার প্রচেষ্টায় লেগে রয়েছে সেখানেও শুধুমাত্র সংস্কৃত ভাষা ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞানীরা প্রথম দিকে ইংরাজি ভাষা ব্যাবহার করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু সেটা ব্যার্থ হয়। কারণ ইংরাজি ভাষার কোনো মাথামুন্ডু নেই।
Why Sanskrit should be restored:
ইংরাজি ভাষাতে BUT- বাট হয় আবার PUT – পাট না হয়ে পুট হয়। ব্যাকরণগত সমস্যা প্রচুর-বলার তাৎপর্য এই যে,ইংরাজি ভাষা সবথেকে গরিব ভাষা। অন্যদিকে সংস্কৃত সবথেকে ধনী ভাষা।কিন্তু ভারতে ৮০০ বছর মুঘল শাসন ২০০ বছর ব্রিটিশ শাসনের জন্য ভারতীয়রা নিজের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। এমনকি বাংলা ভাষা(Bengali), তামিল, তেলেগু, হিন্দি(Hindi) ভাষাও সংস্কৃত ভাষা থেকেই উৎপন্ন এবং ইংরেজির থেকে অনেক বেশি উন্নত। তাই রাষ্ট্রবাদী বিজেপি সরকার সংস্কৃতকে একটি নতুনত্ব স্থান দেওয়ার জন্য কাজ করবে বলে পতিশ্রুতি দিয়েছে।
দেশে বিদেশী ভাষা শেখার প্রচলন দ্রুত বর্ধিত হচ্ছে তেমনি একইভাবে যদি আমাদের প্রাচীনতম ভাষা সংস্কৃত (Sanskrit language) শিখে রাখা হয় তাহলে রোজগারের নতুন সুযোগ মিলিত হবে তবে এর থেকে ভালো কথা আর কি হবে। ভারত বিশ্বকে অনেক বিস্ময়কর জিনিস দিয়েছে তাতে সেটা শুন্য আবিষ্কার হোক বা আবার ভাষার জননী সংস্কৃত ভাষা হোক। যদি কোন কিছুর শুরু না হয়, তবে তার প্রসারিত হবে না, আমরা সংস্কৃত ভাষা পৃথিবীকে দিয়েছি, যা বিশ্বব্যাপী বহু জায়গায় প্রসারিত হয়েছে।
এখন ভাষাগুলির জননী সংস্কৃতকে আরো বেশি মানুষ পৌঁছানোর প্রয়োজন আছে। এর জন্য বিজেপি সরকার সংস্কৃত গবেষণায় উৎসাহিত করার জন্য অনুসন্ধানকারীদের এবং বুদ্ধিজীবিদের জন্য পনিণী ফেলোশিপ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপটি যথেষ্ট বহনযোগ্য। বৈদিক শিক্ষা এর জন্য ভারত এর প্রথম ‘জাতীয় স্কুল বোর্ড’ বানানো একটি ইতিবাচক চিন্তাভাবনা যা সংস্কৃতকে একটি নতুন পরিচয় দান করবে। জানিয়ে রাখি, ভারতের সংবিধানের সৃষ্টিকর্তা ভিমরাও আম্বেদকর এবং বাংলার আসন্ন নাজিরুদ্দীন আহমদও সংস্কৃত ভাষার সমর্থনে ছিলেন।
তিনিও চেয়েছিলেন যে ভারতের প্রাচীনতম ভাষা Sanskrit সর্বত্র স্বীকৃত পাক এবং এগিয়ে চলুক। কেন্দ্রীয় সরকার এর এই পদক্ষেপ একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে অগ্রসর করার মতো। জানিয়ে দি, সংস্কৃত এমন একটা ভাষা যার চর্চা করা ছাত্রের মস্তিষ্ক সাধারণ ছাত্রের থেকে তিনগুন বেশি কাজ করে। এই কারণেই ভারত স্বাধীন হওয়ার পর অনেকজন এই ভাষাকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নেহেরু সেটা হতে দেননি। আজ ভারত থেকে ইংরেজরা চলে গেছে কিন্তু তাদের ভাষার গোলাম হয়ে এখনো ভারতীয়রা রয়ে গেছে। চীন, জার্মানি, ফ্রান্স জাপানের মতো দেশগুলি নিজের ভাষা ব্যাবহার করে। কিন্তু ভারতীয়রা এখনো ভারতীয় ভাষা ব্যবহার না করে ইংরাজি ভাষা ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করে। শুধু তাই নয়, ভারতীয়রা ইংরাজি ভাষা ব্যাবহারের বিরোধ না করে নিজেদের ভারতীয় ভাষার মধ্যেই দ্বন্দ করে থাকে।