অনন্তনাগের জঙ্গিহানায় আরও এক শহিদ, মারা গেলেন গুলিতে জখম পুলিশ আরশাদ

জম্মু কাশ্মীরের অনন্তনাগে হওয়া জঙ্গি হামলায় আহত অনন্তনাগ পুলিশ স্টেশনের এসএইচও আরশাদ খান মারা গেলেন রবিবার। আশঙ্কাজনক আহত অবস্থায় চিকিৎসা চলছিল তাঁর। শেষমেশ মৃত্যু কাছে পরাজিত হল লড়াই। আরশাদ খানের মৃত্যুর পরে ১২ জুনের ওই জঙ্গি হামলায় শহিদ জওয়ানের সংখ্যা বেড়ে হয়ে গেল ৬। হামলার দিনই আরও ৫ জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন অনন্তনাগে।

সূত্রের খবর, ১২ জুন অনন্তনাগ বাস স্ট্যান্ডের কাছে কে পি চকে তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় সিআরপিএফ বাহিনীর উপর আক্রমণ করে দুটি বাইকে করে আসা জঙ্গিরা। অতর্কিত এই হানায় প্রথমে হতচকিত হয়ে পড়েন সিআরপিএফ জওয়ানরা। গুলি লেগে ৫ সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন। আহত হন আরশাদ খান।

গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে শ্রীনগরের শের-এ-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। এর পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এইমস-এ। সেখানেই আরশাদ খানের চিকিৎসা করছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু শেষমেশ তাঁকে বাঁচানো গেল না। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আরশাদের বুকে গুলি লেগেছিল। খুব কঠিন অবস্থায় আনা হয়েছিল তাঁকে।

ওই দিন অনন্তনাগে সেনার পাল্টা হানায় এক জঙ্গিও খতম হয়েছিল। মৃত জঙ্গির কাছ থেকে পাকিস্তানের সামগ্রী পাওয়া গেছিল। পরে আল-উমর-মুজাহিদ্দিন নামের একটি জঙ্গি সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করেছিল।

সেনা সূত্রের খবর, উপত্যকার ওই জঙ্গি সংগঠন আল-উমর-মুজাহিদিন হামলার দায় স্বীকার করলেও, সেই নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে। কারণ গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এই হামলার পিছনে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জইশ-ই-মহম্মদের হাত রয়েছে। পাকিস্তানকে আড়ালে রাখতেই আল-উমর-মুজাহিদিনকে সামনে আনার চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, জঙ্গি নেতা মুস্তাক আহমেদ জ়ারগার ১৯৮৯ সালে এই আল-উমর-মুজাহিদিন সংগঠনটি তৈরি করে। কাশ্মীরি লিবারেশন ফ্রন্টের সদস্য মুস্তাকের সঙ্গে যোগ রয়েছে বিচ্ছান্নতাবাদী সংগঠন হুরিয়ত ও জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনেরও। দীর্ঘদিন ভারতে জেলবন্দি ছিল মুস্তাক। ছিনতাই হওয়া আইসি-৮১৪ বিমানের যাত্রীদের বিনিময়ে মাসুদ আজহারের সঙ্গে জ়ারগারকেও মুক্তি দিতে বাধ্য হয় ভারত সরকার।

অনন্তনাগের এই হামলা ফের মনে করিয়ে দিয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জইশ-এর আত্মঘাতী হামলার ঘটনার কথা। সেই হামলায় ৪০ সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। তার পর থেকেই প্রায় প্রতিদিনই গুলির লড়াই হচ্ছে কাশ্মীরে। সীমান্তেও চলছে দু’তরফের গুলির লড়াই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.