“আঠারো বছর বয়সের নেই ভয়”। ছাড়পত্র কবিতায় সমাজব্যবস্থায় কিশোর-যুবকদের ইতিবাচক ভূমিকার কথা ব্যাখা করতে গিয়ে এই লাইন লিখেছিলেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। ‘আঠারো’-র সেই ‘স্পর্ধা’, ‘দুঃসাহস’ সমাজের কী ভয়ানক হাল করতে পারে, তা এবার তুলে ধরলেন AIIMS-এর (All India Institute of Medical Sciences) ডিরেক্টর ডাক্তার রণদীপ গুলেরিয়া। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোভিড সংক্রমণের (Covid-19) বাড়বাড়ন্তের জন্য তিনি সরাসরি দায়ী করলেন যুবসমাজকে।
গুলেরিয়ার মতে, লাগামহীন, খামখেয়ালি, বেপরোয়া, উন্নাসিক মনোভাবের জন্য নিজেদের দেহে কোভিডের ভাইরাসের চাষ করছেন যুবসমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁদের থেকেই তা ছড়াচ্ছে বয়স্কদের দেহে। এইমস ডিরেক্টর যা বলেছেন, তার সারমর্ম, যুবসমাজ মনে করছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় তাঁদের দেহে থাবা বসাতে পারবে না করোনা। আক্রান্ত হলেও তার মাত্রা হবে খুবই কম। এই ভাবনা থেকেই তাঁরা কোভিড নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পথেঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। নিজেদের ভাবনামতো যুবরা খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও পরিবার ও আশপাশের বয়স্ক ও কো-মর্বিডিটিদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন করোনা।
এদিনের সাক্ষাৎকারে এইমস কর্তা বলেন, “কো-মর্বিডিটি ও অন্যান্য কারণে টিকাকরণে বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও তরুণ-যুবদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সর্বাধিক। সেটাই হচ্ছে, তাঁদের বেপরোয়া মনোভাবের জন্য আশপাশের বয়স্কদের মধ্যে অনেক সহজে ও দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে করোনা। দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পরবর্তী প্রজন্মের নাগরিকদেরও ভাবা উচিত যে, সমাজের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতা অনেক। এই গুরুদায়িত্ব মাথায় রেখে তাঁদের আরও সচেতন হওয়া উচিত।”
এদিকে, করোনার দাপট যেন দিনদিন বেড়েই চলেছে। শুক্রবারই নয়া রেকর্ড গড়ল দেশের করোনা সংক্রমণ। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে (Coronavirus) এ আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৪৬৬ জন, বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ছিল ৭২ হাজার ৩৩০। গত পাঁচ মাসে এই সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ। দেশে একদিনে করোনার ছোবলে মৃত্যু হয়েছে ৪৬৯ জনের। সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৫০ হাজার ৩৫৬ জন, যা দৈনিক আক্রান্তের চেয়ে অনেক কম।