মিগ-২১ উড়িয়ে ফের আকাশে অভিনন্দন, ককপিটে সঙ্গী বায়ুসেনা প্রধান

মিগ-২১ উড়িয়ে ঢুকে গিয়েছিলেন পাক সীমান্তে। পাকিস্তানের অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন পুরনো মিগ দিয়েই। সেই সাহসিকতারই পুরস্কার স্বরূপ ৭৩তম স্বাধীনতা দিবসে ‘বীরচক্র’ সম্মান পেয়েছেন ভারতীয় বায়ুসেনার লড়াকু উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে আবারও ককপিটে বসলেন অভিনন্দন। সেই পুরনো মিগেই। তবে এ বার তাঁর সঙ্গী বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া।

মেরুদণ্ডে চোট, পাঁজরের হাড়ে চিড়, পাক সেনার কব্জায় ৬০ ঘণ্টা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সয়েও বায়ুসেনার এই সাহসী কম্যান্ডার নিজের কর্তর্ব্যে অবিচল ছিলেন। ফেরার পরেও একদিনের জন্যও অবসর নেননি তিনি। সেনা হাসপাতালে চিকিৎসা সেরেই সটান যোগ দিয়েছিলেন শ্রীনগরের বায়ুসেনার স্কোয়াড্রনে। পরবর্তী পোস্টিং কোথায় হবে সেই নিয়ে বায়ুসেনার অন্দরে দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা-কল্পনা চলছিল। বায়ুসেনা প্রধান জানিয়েছেন, ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বায়ুসেনা ঘাঁটি হল পাঠানকোট এয়ারবেস। বলা যেতে পারে, দেশের ফ্রন্ট-ফাইটার এয়ারবেস। তাই এখানেই অভিনন্দন বর্তমানের মতো সাহসী উইং কম্যান্ডারকে বহাল করার কথাই ভাবা হয়েছে।

পাঠানকোট ঘাঁটিতে বায়ুসেনার ২৬টি স্কোয়াড্রন রয়েছে। তার মধ্যে ৫ স্কোয়াড্রন রাশিয়ার বানানো মিগ-২১ ফাইটার জেট। এর মধ্যে চার স্কোয়াড্রনে রয়েছে মিগ-২১ বাইসন জেট, যার কিছু আপগ্রেড করা হয়েছে। বেশিরভাগই পুরনো। গত সপ্তাহেই মিগ-২১ বিমান বাতিল নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন বায়ুসেনা প্রধান ধানোয়া। মিগ-২১ যুদ্ধবিমান চালানোর বিশেষ অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।

১৯৭৩-৭৪ সাল নাগাদ  ভারতীয় বায়ুসেনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মিগ-২১। তার পর গত ৪৪ বছর ধরে উড়ে চলেছে ওই রুশ যুদ্ধ বিমান। যদিও এখন এই বিমানের অধিকাংশ কলকব্জাই ভারতে সংস্কার করা হয়। কারণ রুশরা আর এই বিমান চালায় না। ধানোয়া বলেছেন, এই যুদ্ধবিমান প্রযুক্তিগত ভাবে এতটাই ব্যাকডেটেট, যে এর সংস্কার আর সম্ভব নয়। একাধিক বার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে এই ফাইটার জেট,  যার জেরে মিগ-২১-এর নামই হয়ে গেছে ‘উড়ন্ত কফিন’।

বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের পরদিনই পর দিনই নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাক এফ-১৬ বিমানের সঙ্গে আকাশযুদ্ধে সামিল হয়েছিল এই মিগ-২১ বাইসন জেট। এই যুদ্ধবিমানের ককপিটেই ছিল অভিনন্দন। ভারতের সীমা পেরিয়ে পাক আকাশে এফ-১৬ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন। তবে পুরনো মিগ অচল হয়ে পড়ায় পাকিস্তানের গ্রামেই ইজেক্ট করে নামতে হয় তাঁকে। যার ফলে পাক সেনাদের হাতে যুদ্ধবন্দী হয়েছিলেন অভিনন্দন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.