হায়দরাবাদ কাণ্ডকে কেন্দ্র করে উত্তাল সারা দেশ। পশুচিকিৎসক প্রিয়ঙ্কা রেড্ডির গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনা মনে করে দিয়েছে নির্ভয়া কাণ্ডকে। সারা দেশ জুড়ে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। প্রশ্ন উঠছে কেন আজও মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে পারে না এই সমাজ। কেন রাত হলেই ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে হয় মেয়েদের। সর্বত্র যখন এই ঘটনার নিন্দা চলছে, তখনই কলকাতার রাস্তায় এক হোর্ডিংকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সেই হোর্ডিং-এর নিন্দায় সরব হলেন অভিনেত্রী তথা হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
হোর্ডিংটি বাঙালি মহিলা সমাজের পক্ষ থেকে টাঙানো হয়েছে। সেই হোর্ডিং-এ লেখা, নারীদেহ প্রদর্শনকারী উত্তেজক পোশাকের উৎপাদন ও বিপনন বন্ধ করতে হবে।
মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হোর্ডিং-এর ছবি ছড়িয়ে পড়ে। নেটিজেনরা এর নিন্দায় সরব হন। কীভাবে মহিলা সমাজই এমন কুরুচিকর মন্তব্য করে হোর্ডিং টাঙিয়েছে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন লকেটও।
লকেট এই ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, “সন্ধ্যের আগে আমায় বাড়িতে ঢুকতে হবে,
জামা-কাপড় আমায় দেখে পরতে হবে,
যদি কিছু অঘটন ঘটে তাহলে তার দায় আমার,
কেন? আমি মেয়ে বলে!
এই ধরণের মানসিকতাকে ধিক্কার জানাই,
সমাজে ছেলেদের কোনো দায়িত্ব থাকবে না?
সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে, নাহলে এই সমাজ মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না..
হায়দ্রাবাদের মতো ঘটনা আরো বাড়তে থাকবে।”
লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এই পোস্ট মুহূর্তে ভাইরাল হয়। তিনি প্রিয়ঙ্কা রেড্ডির ঘটনায় সুবিচারেরও দাবি করে পোস্টে।
প্রসঙ্গত, বুধবার সন্ধেবেলায় হায়দরাবাদের এক টোল প্লাজায় নিজের স্কুটি রেখে যান ২৬ বছরের পশুচিকিৎসক প্রিয়ঙ্কা রেড্ডি। তদন্তে জানা যাচ্ছে আগে থেকে পরিকল্পনা করেই তাঁর স্কুটির চাকা পাংচার করে রাখে অভিযুক্তরা। এর পরে ওই প্রিয়ঙ্কা ফিরে এলে তাঁকে সাহায্য করার নামে এগিয়ে আসে। সেই সময়ে তরুণী তাঁর বোনকে ফোন করে ঘটনাটি জানান। সঙ্গে এও জানান, তাঁর ভয় করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর ফোন বন্ধ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে চাতানপল্লি সেতুর কাছে প্রিয়ঙ্কার দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায় তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের পরে তাঁর দেহ পুড়িয়ে দেয় দোষীরা। চার দোষী মহম্মদ আরিফ, জোল্লু শিবা, জোল্লু নবীন, চিন্তকুন্তা চেন্নাকুশভল্লুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সারা দেশের মানুষ দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।