কলকাতা ও দুই ২৪ পরগণায় তাণ্ডব চালিয়ে ফিরে গিয়েছে আমফান। কিন্তু তার তাণ্ডবলীলার ছবি এখনও শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে। কোথাও উপড়ে রয়েছে গাছ। কোথাও বা অন্ধকারে ডুবে শহরবাসী। মিলছে না পানীয় জলও। এমন পরিস্থিতিতে ৪৮ ঘণ্টা কাটিয়ে ফেলেছে শহরবাসী। জনজীবন স্বাভাবিক করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পুরসভা ও সিইএসসি। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে শুক্রবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হয়। তাঁদের অভিযোগ, তিলোত্তমার বিস্তীর্ণ এলাকায় জল, বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তার উপর থেকে গাছ সরানো হচ্ছে না। এমনকী বিদ্যুতের অফিসে ফোন করলে তাঁরাও ফোন ধরছেন না। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি সিইএসসির সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী।
প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান যে বাংলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করবে, সে আশঙ্কা আগেই ছিল। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসই যেন সত্যি হল। বুধবারের প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে নদিয়ারও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন আমফানে এখনও পর্যন্ত মোট ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের পরিবারপিছু আড়াই লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন কন্ট্রোলরুমে বসেই ক্ষয়ক্ষতির কথা ভেবে মাথায় হাত দিয়েছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। ক্ষয়ক্ষতি ঠিক কতটা হয়েছে বৃহস্পতিবার টাস্ক ফোর্সের বৈঠকের পর তা আরও স্পষ্ট হয়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের সঙ্গে সাহায্যের আরজি জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে বাংলার জন্য হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরেও কাল দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে বসবেন কাকদ্বীপে।
এদিকে ৪৮ ঘণ্টা পরেও কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও বিদুৎ ও পানীয় জলহীন। দুর্ভোগে দিশেহারা একটা বড় অংশের শহরবাসী। ক্ষোভের জেরে শুক্রবার বাইপাস, বেহালা, তপসিয়ায়র রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা।শহরবাসীর অভিযোগ, সিইএসসির টিম ঢিমেতালে কাজ করছে। পুরসভা গাছ সরাচ্ছে না, এই অভিযোগে তারা বিদ্যুৎ দিচ্ছে না। বারবার ফোন করলেও সিইএসসি সাড়া দিচ্ছে না। ফলে কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা বিদুৎহীন। কলকাতার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সিইএসইর সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিদুৎমন্ত্রী।