করোনার কার্যকরী টিকা বাজারে আসার সম্ভাবনা তৈরি হতেই নতুন আশঙ্কার কথা শোনাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। WHO বলছে, করোনার টিকা শুধু তৈরি হলেই হল না। সবার জন্য সেই টিকার ডোজ তৈরি করতে হবে। আর গোটা বিশ্বের জন্য সেই ডোজ তৈরি করতে প্রয়োজন প্রচুর অর্থ। যার দশ শতাংশও নাকি এখনও জোগাড় করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা, গোটা বিশ্বের প্রত্যেক বাসিন্দার জন্য যদি করোনার টিকা তৈরি করতে হয়, তাহলে অন্তত ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার খরচ করতে হবে। সেই টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এপ্রিল মাসে তাঁরা বিশ্বের কাছে অনুদান চেয়েছিল। অনেকেই অনুদান করেছেন। কিন্তু তাঁদের কাছে থেকে প্রাপ্ত টাকা WHO’র লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে নয়। এখনও পর্যন্ত মোট প্রয়োজনীয় অর্থের ১০ শতাংশ টাকাও অনুদানের মাধ্যমে ওঠেনি। সোমবার এক ভারচুয়াল অনুষ্ঠানে WHO’র ডিরেক্টর-জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস (Tedros Adhanom Ghebreyesus) বলছিলেন, “আমাদের আশা আর বাস্তবের মধ্যে এখনও অনেক ফারাক। যারা আমাদের অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁদের ধন্যবাদ। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যের ধারেকাছে পৌছাতে পারিনি। শুধু মাত্র ভ্যাকসিন তৈরির জন্যই এখনও ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। যেটা শুনে মনে হচ্ছে বহু অর্থ। আবার যদি দেখা যায়, এখনও পর্যন্ত জি-২০ দেশগুলি ভ্যাকসিন মোকাবিলায় যত অর্থ করেছে, সে তুলনায় এই অঙ্কটা প্রয়োগ নগণ্য। “
প্রশ্ন হল, ভ্যাকসিন তৈরির খরচ তো সব দেশের সরকারের করার কথা, তাহলে WHO এত চিন্তিত কেন? কারণ, বিশ্বের সব দেশের সরকারে ভ্যাকসিন কেনার বা তৈরির ক্ষমতা নেই। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনেক আগেই বলেছে, করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন সমহারে বণ্টন হওয়াটা খুব জরুরি। বিত্তবান দেশগুলি যদি অর্থের বলে ভ্যাকসিনগুলি কুক্ষিগত করে রাখে তাহলে কোনও কাজই হবে না। তাই ভ্যাকসিন যাতে উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলিতেও সমানভাবে বণ্টন করা হয়, তা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশকে একটা নতুন আন্তর্জাতিক জোটে আহ্বান করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যার নাম দেওয়া হয়েছে কোভ্যাক্স। সেই এপ্রিল মাসেই কোভ্যাক্সের মাধ্যমে যাতে ইতিমধ্যেই ৭৫টি দেশ নাম লিখিয়েছে বলে দাবি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। কিন্তু বিশ্বের তথাকথিত শক্তিধর দেশগুলির অনেকগুলি এই জোটে শামিল না হওয়ায় এটি ততটা গুরুত্ব পায়নি। এর মাধ্যমেই এখন টাকা তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।