বুধবারই রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত হাজারের গণ্ডি পার করে দেড় হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। চিকিৎসক মহলের আশঙ্কা সত্যি করে বৃহস্পতিবার তা দেড় হাজারের গণ্ডি টপকালো। সাড়ে চার মাস আগে শেষ বার রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত দেড় হাজার নথিভুক্ত হয়েছিল। রাজ্যের মধ্যে শুধু কলকাতাতেই দৈনিক আক্রান্ত পাঁচশোর উপর। পাঁচশোর কাছাকাছি পৌঁছেছে উত্তর ২৪ পরগনায়। দৈনিক আক্রান্তের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের হারও। বুধবারই তা ১২ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। বৃহস্পতিবার আরও বেড়ে পৌঁছে গেল ১৩ শতাংশের কাছে। দৈনিক সংক্রমণের সাম্প্রতিক স্ফীতি দেখে আশঙ্কিত চিকিৎসক মহল। তাদের তরফে অক্ষরে অক্ষরে কোভিডবিধি পালনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশিই, গত ২৪ ঘণ্টায় এক জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫২৪ জন। এখনও পর্যন্ত কোভিডে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লক্ষ ২৯ হাজার ৪২৫ জন। রাজ্যে নতুন করে যত সংক্রমিত হয়েছেন, তার মধ্যে অধিকাংশই কলকাতার অধিবাসী। মহানগরে আক্রান্ত হয়েছেন ৬২১ জন। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে পিছিয়ে নেই উত্তর ২৪ পরগনাও। ওই জেলায় আক্রান্ত ৪৩৫ জন। কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলির কোভিড পরিস্থিতি প্রশাসনের নজরে রয়েছে। ওই তিন জেলায় দৈনিক আক্রান্ত যথাক্রমে ১১৫ জন, ৬৯ জন, ৬১ জন। প্রসঙ্গত, রাজ্যে শেষ বার দেড় হাজারের উপর দৈনিক আক্রান্ত নথিভুক্ত হয়েছিল গত ৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন আক্রান্ত হয়েছিলেন এক হাজার ৫২৩ জন।
রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ২১৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ১১ হাজার ৮২৭ জনের। দৈনিক সংক্রমণের হার বেড়ে হল ১২.৮৯ শতাংশ। রাজ্যে বর্তমানে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে ছ’হাজার ৯৯৪।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৪ জুনের তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১৬০। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৩৫। তার আগের দু’দিন ছিল ১২৩ এবং ১৪৮। পরের দু’দিনের সংখ্যা ছিল ১৯৪ এবং ২২৯। ১২ থেকে ১৬ জুন, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১৬০, যা ১৪ জুনের চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৫ জুনের চলন্ত গড় হল ১৩ থেকে ১৭ জুনের আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)