আজ পালিত হচ্ছে প্রথম বিশ্ব আলু দিবস।আলু ভারতীয় ফসল নয়।আলুর আদিনিবাস পেরু-বলিভিয়ার আন্দিজ পর্বতমালা সমন্বিত অঞ্চল।দক্ষিণ আমেরিকার ইনকা সভ্যতার অবদান আলুর খামার ভিত্তিক চাষ।ঔপনিবেশিক স্পেনীয় প্রচেষ্টা সেখান থেকে এই ফসলকে চাষের উদ্দেশ্যে আনা হয় ইউরোপে।সেটা ষোড়শ শতাব্দী দ্বিতীয়ার্ধ।তাহলে ভারতে কি আলুর ব্যবহার ছিল না?সে কোন আলু?খনার বচনে যে আলুর উল্লেখ পাওয়া যায় তা সম্ভবত দেশীয় খামালু,চুবড়ি আলুর মতো কন্দ ফসল।ভারতীয় ব্যঞ্জন সুস্বাদু করতে তখন দেশীয় কন্দের বহুল ব্যবহার ছিল।সঙ্গে ছিল নানান জাত-প্রজাতির কচু।তারপর ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাবে ভারতে আলুচাষের সূচনা ঘটল।বঙ্গ প্রদেশে আলুর প্রচলনে ঠাকুরবাড়ির অবদান ছিল অনন্য।

রবীন্দ্রপুত্র রথীন্দ্রনাথ লিখেছেন শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের জমিদারি এলাকায় ডি.এল.রায়ের আলু চাষের প্রচেষ্টা নিয়ে,”আমাদের দেশে তখনকার দিনে সাধারণের মধ্যে আলু খাওয়ার তেমন প্রচলন হয় নি।আলুর চাষ করতে কৃষকেরা জানত না।দ্বিজেন্দ্রলাল কৃষিবিশেষজ্ঞ ছিলেন,তিনি একবার এসে আলুর চাষ প্রচলিত করবার জন্য বাবাকে উৎসাহিত করেন।বাগানের এক প্রান্তে খেত প্রস্তুত করা হল।আলুর চাষের এটাই হবে পরীক্ষাকেন্দ্র।দ্বিজুবাবু বললেন,তিনিই বীজ পাঠিয়ে দেবেন এবং কী করে জমির পাট করতে হবে,কী সার দিতে হবে সব বিষয়ে মালীকে বুঝিয়ে দেবেন।”তথ্যটি রথীন্দ্রনাথের ‘পিতৃস্মৃতি’ গ্রন্থে রয়েছে।
ড. কল্যাণ চক্রবর্তী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.