নাগকেশর ফুল

এটি নাগকেশর ফুল, ইংরেজিতে এর নাম Ceylon Iron Wood অথবা Indian Rose Chestnut, Cobra’s Saffron. শ্রীঅরবিন্দ-শ্রীমা এই ফুলটিকে সমৃদ্ধির প্রতীক হিসাবে উল্লেখ করেছেন (The Nagkeshar flower signifies prosperity). এটি শ্রীলঙ্কার জাতীয় ফুল আর ত্রিপুরা ও মিজোরামে প্রদেশ-পুষ্পের মর্যাদায় আসীন। এর উদ্ভিদবিদ্যাগত নাম (Botanical name) Mesua ferrea এবং Calophyllaceae পরিবারভুক্ত (Family).
নাগকেশর ফুল পছন্দ করতেন শ্রীরামকৃষ্ণ, তাই বহু রামকৃষ্ণ মিশনের শাখাকেন্দ্র ও মঠে এই ফুলের গাছ লাগাতে দেখা যায়। ফুলে ফুলে গাছ যখন ভরে ওঠে তখন এর অপূর্ব সৌন্দর্য।

নাগকেশর ফুলটিকে নাগেশ্বর চাঁপাও বলা হয়। এই ফুলটি শ্রীরামকৃষ্ণ ভালোবাসতেন বলে ঠাকুর পুজোয় এই ফুল উৎসর্গ করার জন্য শ্রীরামকৃষ্ণ পার্ষদেরা তখন নানান স্থান থেকে সংগ্রহ করে আনতেন। স্বামী অখণ্ডানন্দ ‘স্মৃতি-কথা’ গ্রন্থে লিখছেন, “ঠাকুর আমাদের নাগেশ্বর চাঁপা বড় ভালবাসিতেন। নাগেশ্বর চাঁপা দেখিলে তাঁহার সমাধি হইত এবং তিনি বলিতেন, ‘শ্রীমতী রাধার অঙ্গে নাগেশ্বর চাঁপার মধুর গন্ধ পাওয়া যেত।’ স্বামী ব্রহ্মানন্দের দক্ষিণেশ্বরে এই ফুলের একটি চারা লাগাইবার বড় ইচ্ছা ছিল। বাগমারী ও মাণিকতলা নার্সারী হইতে নাগেশ্বর চাঁপার একটি চারা আনিতে তিনি আমাকে বলেন। আমি ঐ-সকল নার্সারীতে একটি চারাও পাই নাই। আলমবাজার মঠে থাকিতে স্বামী রামকৃষ্ণানন্দ ঐ ফুল আনিয়া ঠাকুরকে দিবার জন্য বলেন। তাঁহার মুখে শুনিলাম, ডি. গুপ্তের বাগানে ঐ ফুলের গাছ আছে। একদিন সকালে সুবোধানন্দ ও আমি বারাকপুর ট্রাঙ্ক রোড ধরিয়া দুই জনেই ডি. গুপ্তের বাগানে গেলাম। সেই বাগানের মালীরা বলিল, ‘সাত-পুকুরের বাগানে গেলে উহা পাওয়া যাবে।’ ঘুঘুডাঙ্গা স্টেশনে যাইবার বড় সড়কের উত্তরধারে সাত-পুকুরের বাগান। কলিকাতার নিকটবর্তী আর কোন বাগানে ঐ ফুলের গাছ দেখিলাম না। আমি একা সাত-পুকুরের বাগানে গেলাম।”
@ ড. কল্যাণ চক্রবর্তী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.