পরিনির্বাণের আগে সিংহশয্যায় শয়ন করেছিলেন গৌতম বুদ্ধ। বিশ্ব সংসারকে দিয়েছিলেন শান্তির অমৃতবানি। সেই শয়নমুদ্রাকেই ভাস্কর্যে বন্দি করছে কুমোরটুলি। বাংলা তো বটেই, এই শায়িত বুদ্ধমূর্তি দেশের বৃহত্তম বলেই দাবি করেছে ‘বুদ্ধ ইন্টারন্যাশনাল ওয়েলেফয়ার মিশন’। কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী মিন্টু পালকে (Mintu Pal) দিয়ে এই মিশনই ১০০ ফুট দীর্ঘ মূর্তি গড়াচ্ছে। আগামী বুদ্ধপূর্ণিমায় বুদ্ধগয়াতে এই মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এমনটাই জানালেন মিশনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আর্যপাল ভিক্ষু। তিনি জানালেন, কোশিনগরে পরিনির্বাণের আগে এই সিংহশয্যায় শুয়েই বুদ্ধ তার শেষ বাণী আওড়েছিলেন। মূর্তির পরতে পরতে সেই সর্বত্যাগী বৈরাগে্যর ছাপ, চির অবসরের আনন্দ। তাই এই মূর্তির অন্য কদর বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছে।
সারনাথে বুদ্ধের দাঁড়ানো মূর্তি রয়েছে। বুদ্ধগয়াতে ধ্যানস্থ মূর্তি। দু’টি মূর্তিরই উচ্চতা ৮০ ফুট। আমাদের সিংহশয্যা মূর্তিও ৮০ ফুটেরই। আর্যপাল জানালেন, মূর্তি চাইলে আরও বড় করা যেত। কিন্তু তথাগত ৮০ বছর বেঁচেছিলেন। তাই তা আশিতেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। তবে বেদি যোগ করলে ১০০ ফুট হবে মূর্তির দৈর্ঘ্য। এটিই হবে দেশের বৃহত্তম শায়িত বুদ্ধমূর্তি। ইতিহাসের পাতায় ঢুকতে পেরে খুশি মিন্টু পাল। জানালেন, গোটা বিশ্ব থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও পর্যটকরা বুদ্ধগয়াতে যান। সবাই এই স্বর্ণালী মূর্তি দেখবেন ভাবতেও ভাল লাগছে। আমরা পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরও হয়তো কয়েক হাজার বছর থাকবে ফাইবার গ্লাসের এই মূর্তি।
কথাবার্তা অনেকদিন ধরেই চলছিল। জানুয়ারিতে সিদ্ধান্ত পাকা হয়। বরাত পান মিন্টুবাবু। কিন্তু কাজ শুরু করতে না করতেই লকডাউনের গেরোয় বন্ধ হয়ে যায় কাজ। ফের শুরু হয়েছে। মিন্টু জানালেন, মূর্তির প্রতিটি অংশ আলাদা ভাবে তৈরি করা হচ্ছে। বুদ্ধগয়াতে নিয়ে গিয়ে জোড়া লাগানো হবে। আর্যপাল জানালেন, “মিন্টু পালের কাজ দেখে খুশি হয়েই এই বরাত দেওয়া হয়েছে। আমাদের রাজচন্দ্রপুরে ৪৫ ফুটের একটি বুদ্ধমূর্তি আছে। এটি সবাইকে ছাপিয়ে যাবে।”