লোকসভা নির্বাচনের পরেই তৃণমূলে ব্যপক ভাঙন হবে। হ্যাঁ এমনটাই দাবি করেছেন রাজ্যে দুই তাবড় বাম নেতা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, লোকসভা নির্বাচনের পরেই তৃণমূলে বড় ভাঙন দেখা দেবে। অন্যদিকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, যারা তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন লোকসভা ভোটের পর তারা কি তৃণমূলে থাকবে?
আর এই দুই বাম নেতাদের এহেন মন্তব্যের পরেই রাজনৈতিক মহলেও এই একই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
তাহলে রাজ্যে কি সত্যি আবার পরিবর্তন আসতে চলেছে?
কিসের ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের এই তাবড় দুই বাম নেতা। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর প্রায় সব জায়গা থেকেই সরে গেছে বামেরা। তবু বামেদের সংগঠন কিন্তু আজও তৃণমূল স্তরে রয়েছে। মানুষের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ভালো। ফলে মানুষের চিন্তা ভাবনা ঠাহর করার ক্ষমতাও তাদের ভালো। আর সেই দলের নেতৃত্বরাই বলছেন যারা তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে ভোটের পর তারা তৃণমূলে থাকবে তো? এই কথাটার মাধ্যমে তারা কি এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে লোকসভা ভোটের ফলাফল তৃণমূলের বিপক্ষে যাবে? তার পরেই ভাঙনের মুখে পড়বে রাজ্যের শাসকদল।
সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায় তৃণমূলের ধেঁড়ে ইঁদুর জাহাজ ডোবার আগে অন্য জাহাজ খুঁজে নেবে। তাহলে কি সেই অন্য জাহাজ পদ্মশিবির?
এদিকে বিজেপি নেতৃত্ব বহুদিন ধরেই দাবি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। অমিত শাহ বেশ কয়েকমাস আগেই কাঁথির সভা থেকে এমনটাই দাবি করেছিলেন। বলেছিলেন ২৩ তারিখ দুপুর থেকে কাউন্টডাউন শুরু হবে। হইচই পড়ে গিয়েছিল তার এই মন্তব্যে। তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়ও দাবি করেছেন মমতার সরকার পড়ে যাবে। তবে, সব কিছু ছাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার দাবি করেন, ৪০ জন তৃণমূল বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ২৩ মে পর তারা বিজেপিতে যোগ দেবেন।
খোদ প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্য জনসভায় এই দাবি করায় বামেদের দেওয়া ইঙ্গিত কি আরো জড়াল হল না?
সত্যি যদি তৃণমূলের ৪০জন বিধায়ক তাদের দল পরিবর্তন করেন, তাহলে কি শাসকদলের করুণ পরিণতি কি খুব সামনেই অপেক্ষা করছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী আলুওয়ালিয়া আগেই স্পষ্ট করেই বলেছেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীও সেই ইঙ্গিত দিলেন। ফলে তৃণমূলের বিধায়করা যদি বিজেপিতে চলে আসে তাহলে রাজ্যে সরকার পড়ে যেতে সময় লাগবে না।
অন্যদিকে বাম নেতারাও সন্দিহান আদৌ ভোটের পর তৃণমূলের মাথারা আর দলে থাকবেন কিনা। তবে, বিজেপি নেতৃত্বের দাবি ও বাম নেতাদের আশঙ্কা এই দুয়ে দুয়ে মিলে চার হয় কিনা তার উত্তর দেবে সময়।