২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারাণসী লোকসভা কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। ১৯ মে’র নির্বাচনী লড়াইয়ের আগেই মোদী চমকে দিয়েছেন তাঁর মনোনয়নপত্রের প্রস্তাবকদের নির্বাচনে। যে চারজন প্রধানমন্ত্রীর মননোনয়ন পত্রে প্রস্তাবক হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষাবিদ, কৃষিবিজ্ঞানী, বিজেপি সদস্য এবং একজন শ্মশান কর্মী।
২০১৪ সালে কংগ্রেসের দুর্নীতি বিরোধী হাওয়াই মোদীর পালে আছড়ে পড়েছিল। গত সাড়ে চার বছরে নোট বাতিল, জিএসটি, বেকারত্ব নিয়ে বিরোধীদের ক্রমাগত আক্রমণে সেই ‘মোদী হাওয়া’ অনেকটাই স্তিমিত। তার মধ্যে কড়া হিন্দুত্বের তাস খেলতে গিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে যেমন কিছুটা দূরে সরিয়ে দিয়েছে তেমনই দলিতদের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের বিচ্ছিন্ন আক্রমণ দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে শাসকদলের প্রতি বিরূপ করেছে। ড্যামেজ কন্ট্রোল করার জন্য কুম্ভে প্রধানমন্ত্রী সাফাইকর্মীদের পা ধুইয়ে যে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তাকে আরও জোরালো করার জন্য তাঁর মনোনয়ন পত্রে প্রস্তাবক হিসেবে এমন একজনকে বেছে নিলেন যিনি তথাকথিত উচ্চ বর্ণের অন্তর্ভুক্ত নন। রাজা জগদীশ চৌধুরী বারণসীর মণিকর্ণিকা ঘাটের প্রধান ডোম। সমাজের সর্বস্তরের সমর্থন নিয়েই মোদী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সেই ঘোষণাই যেন তিনি করে দিলেন তাঁর প্রার্থী পদের প্রস্তাবকদের দিয়ে।
কেন তিনি নরেন্দ্র মোদীর মনোনয়ন পত্রে প্রস্তাবক হিসেবে স্বাক্ষর করলেন এই প্রশ্নের জবাবে জগদীশ চৌধুরি জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থী পদের প্রস্তাবক হওয়া গর্বের বিষয়। ওনার সঙ্গে কত লোকই তো দেখা করতে চায় কিন্তু নিরাপত্তার কারণে কজনই বা দেখা করতে পারেন। তাঁর সঙ্গে যে দেখা হয়েছে সেটা জগদীশের সৌভাগ্য। একই প্রশ্ন চিকিৎসক ও বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির মহিলা কলেজের অধ্যক্ষা ড. অন্নপূর্ণা শুক্লাকে করা হলে তিনি জানান, কে বা কারা ওনার নাম প্রস্তাবক হিসেবে দিয়েছেন উনি জানেন না। তবে উনি স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছেন কারণ প্রধানমন্ত্রীর ওপর ওনার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন পঞ্জাবের বর্ষীয়ান নেতা প্রকাশ সিং বাদলের পা ছুঁয়ে নরেন্দ্র মোদীর প্রণাম করার ছবি টুইটারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও সেই একই সময়ে অন্নপূর্ণা শুক্লার পা ছুঁয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রণাম করার ছবিটি প্রকাশ্যে আসেনি। অন্নপূর্ণা দেবী পরিচিত বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি’র প্রতিষ্ঠাতা মদন মোহন মালব্য’র মানসপুত্রী হিসেবে।
অন্য দুই প্রস্তাবকদের মধ্যে একজন হলেন কৃষিবিজ্ঞানী রামশঙ্কর প্যাটেল। নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই তিনি তাঁর পরিচিত। অন্যজন বিজেপি কর্মী সুভাষ চন্দ্র গুপ্তা।