মিষ্টি সম্পর্কের দিন এবং অতীতের সমস্ত সৌজন্য ভুলে ঝালের পালটা ঝালই দেবেন বলে জানিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। কার উপর ঝাল ঝাড়বেন তিনি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর।

‘ঝাল লেগেছে ,আমি ঝালে মরে যাই
সন্দেশে হবে না রাবড়িতে হবে না,
তোমার মিষ্টি মুখে মিষ্টি হাসির মিষ্টি ছোঁয়া চাই’

বদনাম সিনেমার বিখ্যাত গানটি সবারই জানা। সেই ঝাল ঝাল মিষ্টি মধুর সম্পর্ক ফিরে এল বাবুল সুপ্রিয় ও মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। মাঝখানে ভোটের দরজা। খুলে গেলেই দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অতীতে মিষ্টি এবং বর্তমানের ঝাল সম্পর্ক মিলেমিশে কেমন বিদঘুটে স্বাদ হতে পারে তারই যেন হালকা আভাস মিলছে। ‘অবিস্মরণীয়’ সেই স্বাদের আভাস দিয়েছেন আসানাসোল কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়।

অনেকটা ‘খুন কা বদলা খুন সে’-র মতোই মনে হতিরপারে বাবুলের তৃণমূল নেত্রীর উদ্দেশ্যে ‘ঝাল কা বদলা ঝাল সে’ লাইভের পালটা উত্তর। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসানসোলে প্রচারে গিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্দেশ্য করে বলেন। তিনি ২০১৫ সালে ভিক্টোরিয়ায় বাবুল সুপ্রিয় যে ঝালমুড়ি খাইয়েছিলেন সেই ঝাল মুড়ির ঝালের ফল বাবুলের বর্তমান ঝাল ঝাল বুলি।

এই বক্তব্যের পালটা বাবুল লাইভে এসে বলেন, “সৌজন্যের রাজনীতি আমি শুরু করেছিলাম এবং তৃণমূলের মঞ্চে গিয়ে আমি গানও গেয়েছি কিন্তু খুব শিগগিরিই বুঝেছি অপাত্রে সৌজন্য দান করা উচিৎ নয়। সেই জন্য দিদির পার্টি যখনই অসভ্যতা করবে, অভব্যতা করবে, বে-আইনি কাজ করবে, মানুষকে ধমকাবে বা তাদের ভয় দেখাবে সেটা ভোটের আগেই হোক বা নরম্যাল সময়ে হোক আমি ওই ঝালবুলি কিন্তু অবশ্যই ইউজ (ব্যবহার) করবো।”

একইসঙ্গে তিনি বলেন , “সেই ঝালবুলির পিছনে যদি দিদির ঝালমুড়ি কোনও ঝাল লাগিয়ে থাকে তাহলে আমি খুব বিনীতভাবে আমার মাননীয় মমতা দিদিকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাবো।”

২০১৫ সালের ৯ মে-র ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্য সফরে এসেছিলেন। অনুষ্ঠান ছিল নজরুল মঞ্চে। নজরুল মঞ্চ থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়িতে রাজভবনে এসেছিলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তখন ভিক্টোরিয়ার সামনে গাড়ি থামিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে ফুচকা ও ঝালমুড়ি খাইয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই রাজরহাটের এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরাজ প্রশংসা করেছিলেন বাবুল।

তারপর বাবুলকে কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল তাঁর দলের পক্ষে। রুপা গঙ্গোপাধ্যায় থেকে রাহুল সিনহা প্রত্যেকে বাবুলের এমন কাজের একপ্রকার নিন্দা করেছিলেন। বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁর দল এই ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ। সেই ঝাল এতদিন বাদে সেই ঝাল যেন মেটানোর চেষ্টা করলেন বাবুল তবে , দলের প্রতি নয় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল নেত্রীর প্রতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.