ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএর নজরে ৫০ জন আইএস জঙ্গি৷ এদের গতিবিধির ওপরে কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা৷ এইসব জঙ্গি ভারত থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে আফগানিস্তান, সিরিয়া ও অন্যান্য মধ্য প্রাচ্যের দেশে৷
শ্রীলঙ্কা বিস্ফোরণের পর থেকেই নজরদারি শুরু করেছে ভারত৷ কারণ নয়াদিল্লি মনে করছে কলম্বোর বিস্ফোরণের পরে ভারতও সুরক্ষিত নয়৷ যে সব জঙ্গি হামালা চালাতে পারে, তাদের কার্যকলাপ ও গতিবিধির ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে৷
এনআইএর রিপোর্ট বলছে ইতিমধ্যে গত ছয় বছরে ১০৫ জন আইএস জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ এই ইস্যুতে ২৬টি মামলা চলছে দেশের বিভিন্ন আদালতে৷ জানা গিয়েছে, ১৪ জন আইএস জঙ্গির একটি দল এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে রয়েছে৷ ২০১৬ সালের মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে এরা দেশ ছাড়ে৷ আশ্রয় নেয় কাবুলে৷ এরা প্রত্যেকেই আদতে কেরালার বাসিন্দা৷
কাবুলে গিয়ে তারা ইসলামিক স্টেট সংগঠনে যোগ দেয়৷ এছাড়াও বেশ কয়েকজন সিরিয়া ও ইরাকে আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর৷ সেখান থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন ভারতীয় যুবককে তারা এই সংগঠনে যোগ দেওয়ানোর চেষ্টা করছে বলে গোয়েন্দা দফতর সূত্রে খবর৷
২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে আইএস প্রভাবিত জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-হারব-এ-ইসলামের বেশ কয়েকজন সদস্য ধরা পড়ে৷ বানচাল হয় বড়সড় নাশকতার ছক৷ এদের দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল বলে জানা গিয়েছিল৷
এদিকে, ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে দ্বীপরাষ্ট্রকে রক্তাক্ত করে দেওয়া জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা সমুদ্র পথে ভারতের দিকে পালাতে পারে৷ এমনই আশঙ্কায় দুই রাষ্ট্র্রের জলসীমান্ত বরাবর নৌ বাহিনীকে অতি সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ সতর্ক রয়েছে উপকূল রক্ষীবাহিনীও৷ উত্তর শ্রীলঙ্কা থেকে ভারতের তামিলনাড়ু পর্যন্ত দূরত্ব খুবই কম৷
জলপথে পক প্রণালী পার করে যাতে জঙ্গিরা কোনওভাবেই ভারতে ঢুকতে না পারে তার জন্য সতর্কতা জারি হয়েছে তামিলনাড়ুর উপকূলেও৷ গোয়েন্দা বিভাগের আশঙ্কা ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হওয়ায় ‘সেফ প্যাসেজ’ হিসেবে মৎসজীবীদের ছদ্মবেশ নিয়ে পক প্রণালী ব্যবহার করতে পারে জঙ্গিরা৷ তামিলনাড়ু শ্রীলঙ্কার মধ্যবর্তী এই প্রণালী বঙ্গোপসাগর ও মান্নার উপসাগরকে যুক্ত করেছে। ডুবো পাহাড় থাকায় বড় জাহাজ চলাচলে অসুবিধা হলেও ছোট নৌকায় এখানে যাতায়াত হয়৷ সেই পদ্ধতিতেই জঙ্গি অনুপ্রবেশ নিয়ে চিন্তিত নয়াদিল্লি৷
গত রবিবারে পরপর ৮টি বিস্ফোরণে রক্তাক্ত হয় শ্রীলঙ্কা৷ তিনশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায়৷ জখম হয়েছেন পাঁচ শতাধিক। নাশকতার পর থেকেই জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে দেশটিতে৷ ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় শ্রীলঙ্কা সরকারের নজরে এখন দেশটির চরমপন্থী সংগঠন ন্যাশনাল তাওহিদ জামাত (এনটিজে)৷ এই সংগঠনটি ইসলামিক স্টেটের অনুপ্রেরণা নিয়ে চলে৷ আবার নাশকতার দায় নিয়েছে আইএস৷